উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বেড়েই চলেছে আচরণ বিধি লংঘনের ঘটনা। এসবের শিকার হচ্ছেন বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিকট একের পর এক অভিযোগ করলেও কার্যকরী কোন ব্যবস্থা কেউ গ্রহন করছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মজিদ জব্বার এবং জাতীয় পার্টি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সোমনাথ দে রবিবার দুপুরে সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট পৃথক পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বিএনপির প্রার্থী তার অভিযোগে বলেছেন, ইতোমধ্যে বহুবার পোষ্টার ছেড়া, পোড়ানো ও প্রচারে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। ভোটারদেরকে কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকী দেয়া হচ্ছে। তেলিগাতী, পঞ্চকরণ, দৈবজ্ঞহাটি, বলইবুনিয়া, রামচন্দ্রপুর, চিংড়াখালী, বনগ্রাম ও জিউধরা ইউনিয়নের ২৩টি ভোট কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ ঘোষনারও দাবী করা হয়েছে ওই অভিযোগে। ওই ২৩টি কেন্দ্রে দখলবাজি, ব্যালট ছিনতাই, জালভোট ও প্রকাশ্যে ভোটদানে বাধ্য করা হতে পারে বলেও আশংকা প্রকাশ করেছেন বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মজিদ জব্বার।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থী সোমানাথ দে রবিবার সহকারী রিটানিং অফিসারের নিকট দায়েরকৃত এক অভিযোগে বলেছেন, আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষের কর্মীরা রামচন্দ্রপুর, দৈবজ্ঞহাটি, পঞ্চকরণ, তেলিগাতী ও চিংড়াখালীসহ কয়েকটি ইউনিয়নে তার পোষ্টার ছিড়ে পুড়িয়ে ফেলেছে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এ্যাড. শাহ-ই-আলম বাচ্চুর বাড়ি দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়নে বিধায় তিনিসহ তার কর্মীরা নদীর পূর্বপাড়ের ১০টি ইউনিয়নে সোমনাথ দে’র মটরসাইকেল প্রতীকের পক্ষে কোন প্রকার প্রচার চালাতে দিবে না বলেও ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা যায়, আচরণ বিধ লংঘনের সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকেল ৩টার দিকে। পৌর এলাকার বারইখালী গ্রামে সোমনাথ দে’র পক্ষে প্রচারে নিয়োজিত একটি মাইকসেট জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে গেছে কতিপয় যুবক।
এর পূর্বে শনিবার বিকেলে পল্লীমঙ্গল বাজার এলাকায় জামায়াত সমর্থিত ভাইচ চেয়ারম্যান প্রার্থী বজলুর রশিদ বাদশার প্রচার কাজে ব্যবহৃত মটরসাইকেল ও মাইক ভাংচুর করেছে একদল যুবক। এসময় নান্নু ও রাসেল নামে দুই প্রচারকর্মীকে মারপিট করে তাদের মোবাইল ফোন ওই যুবকেরা নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে কালিকাবাড়ি এলাকায় জাতীয় পার্টির নির্বাচনী অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং রাত ৮টার দিকে ভাইজোড়া গ্রামে বিএনপির সমর্থক জাকির হাওলাদারের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় মৃত হাকিম শেখের ছেলে রিপন(২৫)সহ ৫/৬জন আহত হয়। রিপনের ব্যবহৃত মটরসাইকেলটিও ভাংচুর করা হয়। এ সময় বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মজিদ জব্বারের পোষ্টার ছিড়ে আগুনে পোড়ানো হয়। একইদিন রাত ৯টার দিকে জামায়াত নেতা মোঃ রফিকুল ইসলামের বাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে নগদ টাকা, জামায়াত সমর্থিত ভাইচ চেয়ারম্যান প্রার্থীর পোষ্টার, লিফলেট ও নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত অন্যান্য কাগজ পত্র ৬/৭জনের একটি বাহিনী হাতিয়ে নেয়।
এসব ঘটনার শিকার প্রার্থীরা কোন প্রকার আইনী সহযোগীতা যথাসময়ে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেকে অভিযোগ করার সাহসও পাচ্ছেন না। কোন কোন প্রার্থী চরম নিরাপত্তহীনতার মধ্যে সময় পার করছেন। কেউ আবার এলাকার বাইরে অবস্থান করে ভিন্ন কৌশলে নির্বাচনী প্রচারনা ধরে রাখছেন।
এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হালিম জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তৃতীয় ধাপের তফশীল অনুযায়ী আগামী ১৫মার্চ অনুষ্ঠিত হবে এ উপজেলার নির্বাচন।
এ ব্যাপারে আ’লীগ প্রার্থী শাহ-ই-আলম বাচ্চুর সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায় নি।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।