তরুণ্য বা বয়স ধরে রাখার স্বপ্ন থাকে সবারই। আশপাশেই এমন কিছু সহজলভ্য খাবার আছে যা তারুণ্য ধরে রাখে দীর্ঘদিন।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এমনই কিছু তারুণ্য ধরে রাখার খাবারের নাম উল্লেখ করা হয়। ওই খাবারগুলোর নাম ও উপকারীতার কথা এখানে তুলে ধলা হল।
কাঠবাদাম
মাংস পেশী গঠন, মস্তিষ্কের গঠন এবং ত্বকের বলিরেখা দূর করতে কাঠ বাদামের জুরি নেই। তাছাড়া হাড় শক্ত করতেও কাঠবাদাম উপকারী।কাঠবাদামে কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুবই কম থাকে যা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। কাঠবাদামে আরও আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই যা সূর্যের রশ্মি কারণে হওয়া ত্বকের ক্ষতি পুষিয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাছাড়া স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে ভিটামিন ই।
টমেটো
টমেটোর টকটকে লাল রংয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর শরীর খুব সহজেই লাইকোপিন গ্রহণ করতে পারে। তাই টমেটো শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে লাইকোপিন থাকলে মুত্রাশয়, ফুসফুস, প্রস্টেইট, ত্বক এবং পাকস্থলির ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তাছাড়া ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতেও টমেটো বেশ কার্যকর।মিষ্টিআলু
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানের অন্যতম উৎস। তাছাড়া ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে মিষ্টিআলু। এতে রয়েছে গ্লুটাথায়ন নামের একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা হজম শক্তি বাড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সাহায্য করে। আলঝাইমার, লিভারের সমস্যা, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ইত্যাদির ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে মিষ্টি আলু।মিষ্টি আলুতে ভিটামিন সি’র পরিমাণও প্রচুর। আর এটি ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যারা প্রতিদিন চার মিলিগ্রাম পরিমাণ ভিটামিন সি গ্রহণ করেন তাদের ত্বকে তিন বছর পর্যন্ত বলিরেখা পড়ার পরিমাণ ১১ শতাংশ কম ছিল। আর এই পরিমাণ ভিটামিন সি অর্ধেক মিষ্টি আলুতেই পাওয়া যায়।
পালংশাক
এই শাকে আছে লুটেইন নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। তাছাড়া পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামের মতো বিভিন্ন খনিজ উপাদানের অন্যতম উৎস পালংশাক। এর ভিটামিন ও অন্যন্য পুষ্টি উপাদান হাড় মজবুত করতেও সাহায্য করে।
গ্রিন টি
এই চায়ে রয়েছে ক্যাথেচিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা জ্বালাপোড়া-ভাব দূর করে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন দুই থেকে ছয় কাপ গ্রিন টি পান করলে ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমে। তাছাড়া সূর্যের কারণে ত্বকের যে ক্ষতি হয়, তা পুষিয়ে উঠতেও সাহায্য করে গ্রিন টি। হৃদপিণ্ড সুস্থ্য রাখতেও এই চা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গাজর
এই সবজিতে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ। যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া ত্বকের জন্যও গাজর অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন এ কোষ গঠনে সাহায্য করে তাই ত্বক সুন্দর রাখে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার রোধেও সাহায্য করে গাজর।
হলুদ
কারমামিন নামের পলিফেনল যৌগের কারণে এই মসলার রং হয় হলুদ। যা ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া টিউমার হওয়ার সম্ভাবনাও কমিয়ে আনে। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসের এক গবেষণায় জানা যায়, মস্তিষ্ক সুস্থ রেখে আলঝাইমার রোগের ঝুঁকিও কমায় হলুদ।বোস্টনের ডানা ফারবার ক্যান্সার ইনিস্টিটিউটের পুষ্টিবিদ স্টেসি কেনেডি বলেন, “হলুদের সঙ্গে কালো-গোলমরিচ বা ঝাল মসলা মেশালে হলুদের কারমিনের কার্যকারিতা এক হাজার গুণ বেড়ে যায়।”
তথ্য ও ছবি: রয়টার্স ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর।