১৯৭১ এর বসন্ত,
ফিরে যাচ্ছি আজ থেকে ৪২ টি বসন্ত পূর্বে।
সারাদেশে একটি সুর বারবার ধ্বনিত হচ্ছে-
“স্বাধীনতা চাই, স্বাধীনতা চাই”।
মাঝেমাঝে দুই একটা বাঙ্গালির আর্তচিৎকার শুনি,
ওর বুকে শেল বিধেছে। চলে যাচ্ছে স্বর্গে।
তবে ও মরেও বলছে ‘স্বাধীনতা চাই’।
চাই মুক্তি।
এল ১৯৭১ এর শেষ শীতকাল।
ষোলই ডিসেম্বর ঊনিশশত একাত্তর,
ঐ “স্বাধীনতা চাই” স্লোগানের দেখা পাই বাস্তবতার—
আমরা সাড়ে সাত কোটি বাঙালি;
পেলাম সেই মুক্তি।
এর পর এক-দুই করে পরপর ৪২ বসন্ত পার করলাম,
কেটে গেল পাঁচ শতাধিক মাস,
পনের সহস্রাধিক দিনও কাটিয়ে দিলাম।
ধুর! কোথায় একটু বসন্তের গুনগান করব-
তা না করে আমার কলমের নিশানা অন্য দিকে ঘুরে গেল,
কারন আজ আমার কলমও জ্বলে উঠল
১৬ কোটি বাঙ্গালির সাথে।
আজকের বসন্তের সাথে
’৭১ এর বসন্তটার মিল দেখে চমকে উঠলাম।
সেদিনের মত আজও একটি স্লোগান,
“ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই,
রাজাকারের ফাঁসি চাই,
ফাঁসি ছাড়া দাবি নাই”।
’৭১ এর মত আজ আবার সেই চিৎকার-
ওকে খুন করা হল;
ওর ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিল,
ওর সর্বস্ব লুট হল,
আর ওদিকে মসজিদ-মন্দির ভাঙ্গা হল।
ভিখারীনির ভাঙ্গা থালাটিও আর থাকল না-
ঐ লোভীদের বুভুক্ষু দৃষ্টি থেকে।
আর ঐ ভিখারীনি তার সব টাকা তুলে দিয়েছে-
শাহবাগের জাগ্রত তরুণদের হাতে। বলেছে-
“সরিস না তোদের লক্ষ্য থেকে”
ঐদিনই ঐ ভিখারীনির লাশ পাওয়া গেল রক্তাক্ত অবস্থায়।
তিন বছরের বাচ্চাটির কথা বলি।
যে আজ পড়বে-
‘ক’ তে “কলম দিয়ে লিখি চল”
‘গ’ তে “গরুর দুধ খেতে ভাল”
সে আজ বলছে-
‘ক’ তে “কাদের মোল্লা”
তুই রাজাকার, তুই রাজাকার।
‘গ’ তে “গোলাম আযম”
তুই রাজাকার, তুই রাজাকার।
মানবতাবিরোধীদের বিচার চলছে,
যেমনটা ’৭১ এর যুদ্ধে চলেছিল।
তবে ’৭১ এর মত সেই বিজয়মুহুর্তটা কি
৪২ বছর পরের এই বসন্তে এসে ধরা দেবে?
এবারের বসন্তে ১৬ কোটি বাঙ্গালির দাবি-
রাজাকারের ফাঁসি চাই।
কোকিলের ডাক শুনব পরে;
আগে দাবির সফলতা চাই।
গোটা বিশ্ব চেয়ে রইল সেই সফলতার আশায়……………
– সুমন বিশ্বাস
স্বত্ব ও দায় লেখকের…