বাগেরহাট।
সুন্দর,শান্ত, নিরিবিলি, প্রাচীন শহর।
আধুনিকতার ছোঁয়া নেই বললেই চলে। প্রচলিতভাবে মফস্বল শহর বলা যায়।
অন্যান্য মফস্বলে জন্ম নেওয়া ছেলেদের মত আমিও খুব বেশী স্মার্ট না। খুব আধুনিকও না। আত্মবিশ্বাসে অনেকটায় ঘাটতি আছে।
তবে মফস্বলে জন্ম নেওয়া ছেলে গুলো অনেকবেশী স্বপ্নাতুর হয়।
মেগাসিটির কিশোর বয়সী ছেলেদের থেকে তাই আমরা অনেকটা ই পশ্চাৎপদ। বাস্তব জ্ঞান মূলত অর্জন করি আমাদের চিরপরিচিত নিবিড় আঙ্গিনার বাইরে আধুনিক শহরগুলোর পারিপার্শিকতায়।
আমি সত্যিকার অর্থেই সাধারণ এক মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান।
যেখানে ভালবাসা আছে। স্নেহ আছে। বাৎসল্য আছে।
কিন্তু উদ্দামতা নেই।অনেক নিয়মের মধ্যে বেড়ে উঠতে হয়।স্বপ্নের বীজ যেমন পরিবার থেকেই বপন করা হয়, সেই বীজ আবার পরিবারই উপড়ে ফেলে।
তবে জীবনের শিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত পরিবারই সব থেকে সেরা বিদ্যাপীঠ। তবে এই শিক্ষা অধিকাংশ সময় প্রায়োগিক উৎকর্ষতায় পৌছায় না।
এখানে আমরা স্বপ্ন দেখি সীমাহীন। কিন্তু বাস্তবতা বিবর্জিত এসব স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়।
মধ্যবিত্ত জীবনে নির্ঝঞ্চাট থাকার শিক্ষাটা খুব ভালভাবে দেওয়া হয়।
আমি বরাবরই পিছনের সারির ছাত্র। কখনো খুব ভাল ফলাফল করিনি। আবার আমাকে গবেট ছাত্রও বলা চলে না।
আমার মধ্যবিত্ত জীবনের মত আমার রেজাল্টও মধ্যবিত্ত।
আমি বাধাধরা নিয়মের মধ্যে থাকতে পারিনা। তাই পাঠ্যপুস্তকের বাইরে সবধরনের বই ই মুটামুটি পড়া।
তবে মধ্যবিত্ত জীবনে, মফস্বল শহরে শেখান হয়ে থাকে কিভাবে ভবিষ্যতে নিশ্চিত একটা আয়ের উৎস তৈরি করা যায়।
তাই আমার উদ্ভাভিত শিক্ষাপদ্ধতি এখানে অপ্রয়োজনীয়ভাবে জীবনের মূল্যবান সময়ের অপচয়।
আমাদের এখানে জীবন দ্রুতগামী নয়। মানুষের মন প্রগতিশীল নয়।
তাই ১৮ বছরের একটা ছেলে যদি মুখ ভর্তি দাড়ি, এলোমেলো চুল, রুক্ষ চেহারা নিয়ে একই টি-শার্ট আর প্যান্টে টানা একসপ্তাহ উদাসীনভাবে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় তবে সে বখাটে।
কিন্তু এটা কেউ বুঝতে পারে না, সবার পক্ষে কর্পোরেট হওয়া সম্ভব।
এইরকম মফস্বল শহরে মানুষ তার সীমিত জ্ঞান আর সংকীর্ণ চিন্তাকেই সর্বোৎকৃষ্ট মনে করে।
শেষকথা:আমি যতই নামের আগে রাফা ব্যবহার করি না কেন।আমি রাফা নই। গ্ল্যামারের প্রয়োজন নেই আমার।
আমার দরকার এক প্যাকেট গোল্ড লিফ।
ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে নিজের মতো করে হেঁটে বেড়াব।এতেই জীবনকে উপভোগ করি।
আর সমাজ?!
সেতো আমার না। তোমাদের বানানো।
তবে সমাজকে তোয়াক্কা করব কেন?