রামপাল এবং ….. বক্তব্য
Bagerhat Info Blog
26 September 2013
মুক্তবাক, লেখালেখি
108 পঠিত
Baki Billah
বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প আছে কিন্তু সুন্দরবনের কোনো বিকল্প নেই- এই শ্লোগানে মুখরিত এখন বাগেরহাটের প্রতিটি অঞ্চল।সুন্দরবন রক্ষার লংমার্চ আসছে, বাগেরহাটে সাজ সাজ রব। এলাকাবাসী প্রস্তুত লংমার্চকে বরণ করতে, একাত্ম জাতীয় কমিটির দাবির সাথে।
বাগেরহাটের পরিবেশবীক্ষণের বন্ধুরা সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। লংমার্চ উপলক্ষ্যে পরিবেশবীক্ষণের আয়োজনে স্কুল বিতর্কের আজ ছিল ফাইনাল রাউন্ড। সচেতনতার অভাবই পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রধান কারণ শিরোনামের বিতর্কে ফাইনালে সরকারী গার্লস স্কুলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন সরকারী বয়েজ স্কুল। বিতর্কের দুপক্ষের আলোচনাতেই ঘুরে ফিরে মূল আলোচ্য হিসেবে থাকলো রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রসংগ। নানান কাজের মধ্যে ফাইনাল বিতর্কে বিচারকের দ্বায়িত্ব পালন করলাম। বিচারক অন্য দু’জন ছিলে জুয়েল ভাই ও সাগর ভাই…
Anworhossain Farmer
সরাসরি দুই লাখ মানুষের কর্মসংস্থান নষ্ট হবে সুন্দরবনের কাছে বিদ্যুতকেন্দ্র হলে। পশুর নদী তখন কোন এক মরা নদীতে পরিণত হবে। ব্যাপক ক্ষতি হবে সুন্দরবন সহ আশপাশের এলাকার।
অথচ এনিয়ে জামাত বিএনপির কোন মাথাব্যাথা নেই। এবং ছাত্রলীগও জামাতি কায়দায় নেমেছে অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা, কুৎসার ঝুলি নিয়ে। নোংরাভাবে আক্রমন করছে সাধারন আন্দোলনকারী ও দেশের প্রগতিশীল ধারাকে। মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া তথ্য দিয়ে হেয় করছে আন্দোলনে অংশ নেওয়া নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্টিকে।
এ যেন জামাত শিবিরেরই আরেক রুপ, যেন আরেক প্রতিক্রিয়াশীল, রাজাকার, উচ্চিষ্টভোগী শ্রেণী। দেশ, মানুষ, প্রকৃতি, নিরাপত্তা যাদের কাছে মুখ্য নয়। বরং দেশ জাহান্নামে যাক, নিজেদের আখের গোছাতে পারলেই হলো।
কেউ কেউ আরেক ধাপ এগিয়ে বুদ্ধিজীবি সেজে বলছে, রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র হলে পরিবেশের ক্ষতি হবেনা ব্লা ব্লা ইত্যাদি। তা বলি তোমরা আর ডাঃ ইউনুসে তফাত কি, বা গোলাম আজমকে গালি দিয়ে আর লাভ কি? তোমরাইতো যে লাউ সে কদু। একদল পাকিস্থানের রাজাকারি করেছো, আরেকদল আজ ভাকিস্থানের রাজাকারি করছো।
তোমাদের শূয়োর না বলেও পারা যায়না।
সবছেয়ে বড় কথা, এদেশে ছাত্রলীগের ভূমিকা কি? ইতিহাস কি বলে? ছাত্রশিবিরের সাথে ছাত্রলীগের তফাত কি?
খুন, গুম, ধর্ষন, চাঁদাবাজি, জোচ্চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস, বখাটেপনা ছাত্র ছাত্রলীগ ছাত্রশিবির এদেশকে কি উপহার দিয়েছে? কবে দাঁড়িয়েছে আমার মতো প্রান্তিক মানুষ তথা কৃষক, শ্রমিক, জেলে, তাঁতী, মজুরের পক্ষে?
না, দাঁড়ায়নি। কোন কুক্ষনেও দাঁড়ায়নি।
গার্মেন্টসে মালিক শ্রমিকে যখন দ্বন্দ হয়, ছাত্রলীগ তখন মালিক শ্রেণীর পক্ষে ওকালতি করে। কৃষকদের সাথে যখন সরকারের সংঘাত হয়, কথিত ছাত্রলীগ ছাত্রশিবির তখন সরকারেরই দালালি করে। দ্রুতগামী প্রাইভেট কারটি যখন রিক্সায় ধাক্কা মেরে সাঁ সাঁ করে চলে ছাত্র নামক কথিত শূয়োর শাবকরা তখনও প্রাইভেট কারওয়ালাদের পক্ষে কথা বলে। একবার দুইবার নয়, বারবার, প্রতিদিন, চল্লিশ বছর ধরেই এভাবে চলছে। আজ যখন সরকারের দেশ বিরোধী চুক্তির ফলে দেশের দুই লাখ কৃষক, শ্রমিক, জেলে, কাঠুরিয়ার কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়ছে এবং আরো বিশ লাখ মানুষের জীবন জীবিকা, বসত ভিটা ও বেঁচে থাকার মতো পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে ছাত্রলীগ তখনও সরকারের পক্ষে সাফাই গাইছে। মানুষকে ভুলবাল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে, বিপদগামী করছে।
সবশেষে বলতে চাই, ছাত্রলীগ কোন ছাত্র সংগঠন নয়। এটি সন্ত্রাসি, খুনী, ধর্ষক, চাঁদাবাজদের সংগঠন। এর আগে যারা মুক্তিযোদ্ধার নামে চাঁদাবাজি করেছে, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসের নামে চাঁদাবাজি করেছে। সমাজে রগরগে পর্ন ছড়িয়েছে। মাদক ব্যাবসা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে।
মোদ্দকথায়, শিক্ষা দীক্ষা, শিল্প সংস্কৃতি বিষয়ে এদের নুন্যতম আগ্রহও নেই। কখনো ছিলোও না। এক্ষেত্রে প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশ, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, স্বার্ভবোমত্ব, জ্বালানি, বৈশ্বিক পেক্ষাপট, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে ছাত্রলীগের ধারনা অত্যান্ত নিঁচুমানের ও একরোখা।
এসব গুরত্বপূর্ন বিষয়ে ছাত্রলীগের মতামত বরাবরই অগ্রহনযোগ্য।
বরঞ্চ এসব বিষয়ে এদের কথা বলাও আদা বেপারি জাহাজের খবর নেওয়ার মতো। এমনকি এদের নেতারাও এসব বিষয়ে কথা বলার যোগ্যতা রাখেনা। তৌফিক ই এলাহি তাদেরই একজন! অনেকটা টিভি বিজ্ঞাপনের ‘আরিচা ফেরি ঘাটের বাথরুমের বদনা’ ভদ্রলোকের পানি খাওয়ার মগে পরিণত হওয়ার মতো।
হ্যাঁ, ঠিকই বলছি! জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ই এলাহি ছাত্রলীগের দাঁত না মাজা, বা হিরোঞ্চি, বা পর্নোবাজ কোন নেতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
সুতারাং, সংগ্রাম চলবে।
এই সংগ্রাম জনতার সংগ্রাম।
ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, জেলে, তাঁতীর সংগ্রাম।
দেশ বাঁচানোর সংগ্রাম।
পরিবেশ, প্রাণী, মানুষ, সম্পদ, স্বার্ভবোমত্ব বাঁচানোর সংগ্রাম।
নির্বোধ মাথামোটা, সন্ত্রাসি ছাত্রলীগের বুদ্ধিতে দেশ চলবে না।
আবর্জনাতুল্য ছাত্রলীগ, আবর্জনার মতোই ভেসে যাবে।
স্বপ্নের মতো নতুন দেশের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে শ্রীগ্রই।
আর এবারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবে কৃষক- শ্রমিকরা…
Moinul Ahsan Saber
রামপাল নিয়ে একজনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নাস্তানাবুদ অবস্থা। খুবই বিদ্রুপের সঙ্গে বললেন, কী ভেবেছেন? ওখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করেও সুন্দরবন কীভাবে রক্ষা করা যাবে, সরকার তা নিয়ে ভাবেনি? আপনার ধারণা, সরকার সেই মান্ধাতা আমলেই পড়ে আছে!
মিনমিন গলায় কিছু বলতে গেলে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিলেন — শুনুন, নাসিম সাহেব কিছুদিন আগে কী বলেছেন? বলেছেন, কেয়ামত হলেও নির্বাচন হবে। যারা কেয়ামতের পরও নির্বাচন করার সিস্টেম বের করে ফেলতে পারে, তারা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করেও সুন্দরবন রক্ষার সাধারণ কাজটা করতে পারবেন না!
Mohammad Ali
বাগেরহাট শহরের সোনাতলা মোড়ে মোবাইলে রিচার্জ করতে গিয়ে বন্ধু জিকোর জন্য কিছুক্ষন সেখানে বসেছিলাম। পাশেই কয়েকজন কলেজ পড়ুয়া ছাত্র মোটামুটি উচ্চস্বরে কথা বলছিল। এলোমেলোভাবে কানে আসা কথাগুলো শুনে বুঝছিলাম ওরা রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নিয়ে কথা বলছে। শুনে বেশ ভালো লেগেছিল। অন্তত রাজনীতি নিয়ে কথা বলছেনা। হঠাত্ তাদের মধ্যে থেকে একজন বলে উঠল, কে দেশকে বেশি ভালোবাসে? দেশের জন্য কার অবদান, ত্যাগ বেশী ? আনু মুহম্মদ না শেখ হাসিনার?
এক পর্যায়ে প্রশ্নটা আমার কাছেও এসেছিল। আমি সরাসরি কোন উত্তর দিতে পারিনি।
Shishir Kaes
লেখা এবং ছবি লেখকদের ফেসবুক থেকে নেওয়া…