সুন্দরবন আমার মা, ভারত তুই ফিরে যা
Bagerhat Info Blog
9 July 2013
অণুকথা, লেখালেখি
107 পঠিত
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজীব গান্ধি ন্যাশনাল পার্কটি বাঘ, বাইসন এবং হাতির জন্য বিখ্যাত এবং একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। বনাঞ্চলটির বিস্তৃতি ৬৪৩ বর্গকিমি জুড়ে যা সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তনের দশ ভাগের এক ভাগ।
২০০৭ সালে এই রাজীব গান্ধি ন্যাশনাল পার্ক থেকে ২০ কিমি দূরে কর্ণাটক রাজ্যের মাইসুর জেলার চামালাপুর গ্রামে ১ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু ভারতীয় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত গাইডলাইন,১৯৮৭ অনুসারে কোন সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ২৫ কিমি এর মধ্যে কোন কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ স্থাপন করা যায় না। তাছাড়া চামালাপুর গ্রামের যে দুই হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করে কয়েক হাজার মানুষকে উচ্ছেদ করার কথা তাও ছিল কৃষি জমি।
ফলে রাজীব গান্ধি ন্যাশনাল পার্কের ২০ কিমি এর মধ্যে কৃষিজমি নষ্ট করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনাটি জনগণের প্রবল বিরোধীতার মুখে ভারত সরকার বাতিল করতে বাধ্য হয় ২০০৮ সালে।
যে ভারত তার নিজ দেশে সুন্দরবনের চেয়ে দশ ভাগের একভাগ আয়তনের একটি বনাঞ্চলের ২০ কিমি এর মধ্যে ১ হাজার মেগাওয়াটের তাপ ভিত্তিক কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে পারেনি, সেই ভারত এবার বাংলাদেশে সুন্দরবনের মতো একটি বিশ্ব ঐতিহ্য, জীব বৈচিত্রের অফুরন্ত আধার, রামসার সাইট এবং ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ বলে ঘোষিত পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের মাত্র ১৪ কিমি এর মধ্যে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের একটি বিশাল তাপ ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে!
ভারতের সীমানার ভেতরের বনাঞ্চল সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ হলেও বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে যুক্ত সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের যেন কোন গুরুত্ব নেই, যেন বাংলাদেশের সুন্দরবন একটি এতিম বনাঞ্চল যার পাশে দাড়ানোর কেউ নাই!
লেখক- কল্লল মুস্তফা