মীম, সামিয়া, মুরুফ, ইয়াছিন চার বন্ধু। ওদের বাড়ি বরগুনা জেলা সদরের ১০নং নরলটনা ইউনিয়ন গাজী মাহামুদ গ্রামে।
স্কুল খেকে বাড়ি ফিরছিল, এমন সময় ওদের সাথে দেখা হয়। আমি কিছুটা অবাই হই এক জন হুইল চেয়ারে আর বন্ধু সূলভ বাকিরা তাকে নিয়ে যাচ্ছে। পরে কথা বলে জানতে পারি ওরা সবাই লেখাপড়া করে এখান কার ‘গাজি মাহামুদ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়’।
হুইল চেয়ারে থাকা মোসাম্মদ আয়সা সিদ্দিকি মীম পড়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে। ছোট বেলা থেকেই অসুস্থার কারে ঠিক একা চলতে পারেনা মীম। তাই তার সাথি এ হুইল চেয়ার। কিন্তু গ্রামের মেঠ পথে চাইলেও তার এ সাথি সবসময় পারেনা পথ চলার সাথি হতে। কিন্তু হুইর চেয়ার এর থেকেও যে সাথিরা মিমের বড় ভরসা তার ওর বন্দু। মীমের সবচেয়ে কাছের বন্ধু সামিয়া সেও তার সাথে একই স্কুলে পড়ে। আর বসাও পাসাপাসি।
মীমের কাছের আরও দু’বন্ধু মারুফ আর ইয়াছিন। ওরা পড়ে ৭ম শ্রেণীতে। ওদেরা দু’জনও থাকে একই গ্রামে।
ছোট বেলা থেকেই নিজের প্রতিবন্ধকতাকে জয় করবার অদম্য ইচ্ছা ছিল মীমের। পরিবার আর ওর বন্ধুদের সহায়তায় আজ সে পথেই তার অগ্রজাত্রা।
বাসা থেকে মীমের স্কুলের দুরত্ব প্রায় দেড় কিলমিটার। যার অর্ধ কিলমিটার আবার মাটির রাস্তা। তাই বৃষ্টির দিনে তার স্কুলে যাওয়া ছিল প্রায় অসম্ভব। কিন্তু মীম জানায়, শুধু বন্ধুদের কারনেই আজ নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছে সে। বৃষ্টিতে যখন একদম কাঁদা ভরা থাকে ওদের বাসার সামনের পথ তখও মীম স্কুলে যায় ওর বাবা-মা আর বন্ধুদের সহায়তায়। বৃষ্টির দিন বেশির ভাগ সময় ওর বাবা-মা মাটির পথ টুকু পার করে দেয় আর বাকি পথ বন্ধরা। আর অনন্য সময় ওর নিয়মিত আসা যাওয়া ওর বন্ধুদের সাথে।
মিমের বন্ধু সামিয়া জানায়, মীম খুব ভাল ছাত্র ক্লাসে ১ রোল ওর। ৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায়ও ভাল করে সে। ওরা দু’জনই বৃত্তি পেয়েছে। আর শিক্ষরাও ওদের খুব ভালবাসে।
ইউনিসেফ এর একটা জরিপ কাজে সহায়তার সুযোগে গত কয়েক দিনে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় সিড়রে ক্ষতিগ্রস্থ উপকুলের জনপথ গুলতে যাবার। সুযোগ হয়েছিল সংগ্রামী উপকুল বাসির সংগ্রমের জীবন দেখার। সুযোগ হয়েছিল এমন বন্ধুতের গল্প শোনার…
স্বত্ব ও দায় লেখকের…