ইনফো ডেস্ক | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
ইতিহাস অতীতের কথা বলে। কেবল অতীত ঘটনার পারস্পরিক বর্ণনাই নয়; বরং ইতিহাস জুড়ে থাকে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, গৌরব-বিয়োগব্যথা।
প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাই কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে; পথ দেখায় আগামীর।
তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি সবসময় গুরুত্ব বহন করে।
আজ ১ নভেম্বর ২০১৬। ১৭ কার্তিক ১৪২৩ বঙ্গাব্দ, মঙ্গলবার। এক নজরে ‘ইতিহাসের এই দিনে’ ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনাবলী–
১৭৫৫ : পর্তুগালের লিসবনে ভূমিকম্পের আঘাতে ৬০ হাজার লোকের মৃত্যু হয়।
১৮৫৮: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে ভারতের শাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করে ব্রিটিশ রাজতন্ত্র।
১৮৬৪ : প্রথম পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে মানি অর্ডার পদ্ধতি চালু হয়।
১৮৮০: কলকাতায় প্রথম ঘোড়ায় টানা ট্রাম চলাচল শুরু হয়।
১৯২৪ : মঙ্গোলীয় প্রজাতন্ত্রের জন্ম হয়।
১৯৫৫ : পর্তুগালে ভূমিকম্পে ৩০ হাজার লোক নিহত হয়।
১৯৮১ : অ্যান্টিগুয়া ও বারমুডা স্বাধীন হয়।
১৯৯২ : বাংলাদেশে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার মূল ক্যাম্পাস উদ্বোধন করা হয়।
২০০৭ : নির্বাহী বিভাগ থেকে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ আলাদা হয়।
জন্ম–
১৯৩২ : একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, সাবেক রাষ্ট্রপতি।
১৯৫০ : রবার্ট বি. লাফলিন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান পদার্থবিজ্ঞানী।
১৯৬৮ : আকরাম খান, সাবেক বাংলাদেশী ক্রিকেটার।
১৯৭৩ : ঐশ্বরিয়া রাই, ভারতীয় অভিনেত্রী।
১৯৭৪ : ভিভিএস লক্ষন, ভারতীয় ক্রিকেটার।
মৃত্যু–
১৯৫৯ : কার্লোস সাভেদ্রা লামাস, আর্জেন্টাইন রাজনৈতিক নেতা, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী।
ব্যক্তিত্ব–
দীনবন্ধু মিত্র: ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে (১ নভেম্বর) মৃত্যুবরণ করেন ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা নাটকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রূপকার দীনবন্ধু মিত্র। ১৮৩০ সালে ভারতের নদিয়া জেলার চৌবেরিয়ায় জন্ম গ্রহণ করা দীনবন্ধু মিত্রের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রাম্য পাঠশালায়। সেখানে কিছুদিন পাঠগ্রহণের পর পিতা গন্ধর্ব নারায়ণ তাঁকে জমিদারের সেরেস্তার কাজে নিযুক্ত করে দেন।
বাংলার আধুনিক নাট্যধারার প্রবর্তক মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমসাময়িক দীনবন্ধু; অবশ্য মাইকেল প্রবর্তিত পৌরাণিক বা ঐতিহাসিক নাট্যরচনার পথে না গিয়ে বাস্তবধর্মী সামাজিক নাট্যরচনায় মনোনিবেশ করেন। এই ধারায় তিনিই হয়ে ওঠেন পরবর্তীকালের নাট্যকারদের আদর্শস্থানীয়।
বাংলার আধুনিক নাট্যধারার তার প্রথম প্রকাশিত নাটক নীলদর্পণ প্রকাশিত হয় ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে। লেখকের দুটি বিশেষ প্রহসন হল ‘সধবার একাদশী’ ও ‘বিয়ে পাগলা বুড়ো’। যা আজও বাংলা নাটকের জন্য আলোর পথ হয়ে আছে।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়: ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ১ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ১২ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার কাচরাপাড়ার নিকটবর্তী ঘোষপাড়া-সুরারিপুর গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বিভূতিভূষণ। তার পৈতৃক নিবাস উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বারাকপুর গ্রামে।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় মূলত উপন্যাস ও ছোটগল্প লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। পথের পাঁচালী ও অপরাজিত তার সবচেয়ে বেশি পরিচিত উপন্যাস। অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে আরণ্যক, আদর্শ হিন্দু হোটেল, ইছামতী ও অশনি সংকেত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তার পিতা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন প্রখ্যাত সংস্কৃত পণ্ডিত। বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী উপন্যাস অবলম্বনে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত চলচ্চিত্রটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন।
উপন্যাসের পাশাপাশি বিভূতিভূষণ প্রায় ২০টি গল্পগ্রন্থ, কয়েকটি কিশোরপাঠ্য উপন্যাস ও কয়েকটি ভ্রমণকাহিনী এবং দিনলিপিও রচনা করেন। ১৯৫১ সালে ইছামতী উপন্যাসের জন্য বিভূতিভূষণ পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার রবীন্দ্র পুরস্কার (মরণোত্তর) লাভ করেন।
সম্পাদনাঃ সুব্রত কুমার মুখার্জী।
এইচ-এসআই/বিআই/১ নভেম্বর, ২০১৬