এমনটি হওয়াই কি স্বাভাবিক নয়! খুব বেশি করে মনে পড়া, চোখের জলে দু’গাল নোংরাটে হওয়া, নেশাগ্রস্থের মতো টসটসে রক্তিম দু’টো লোচন অনাবৃত হওয়া, ঢেকে দেয়া স্মৃতিময় কাটানো তোদের সাথের দিনগুলিকে। আচ্ছা, আত্মহত্যা নাইবা হলো, আত্মঘাতী হতে দোষটা কিরে! নাকি ধর্মের ১৪৪ ধারা সেখানেও? ভেবে দেথেছিস কখনো, ’৫৬ এর শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ’৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন অথবা বৈরী হতে থাকা ’৬৯ এর গন অভ্যূথ্থানের প্রেক্ষাপটকে? অথচ দেখ, জড় পদার্থের শ্রেষ্ঠ নিদর্শণ কংক্রিট আর সিমেন্টের তৈরি জাতীয় স্মৃতিসৌধ তাঁর বুকে আগলে রেখেছে কতটা আস্পর্ধা নিয়ে।
আচ্ছা এমনটি হলে কেমন হয়, ৭১ ফুট উচ্চতার শহীদ মিনারটির শীর্ষবিন্দু থেকে লাফিয়ে পড়া! আত্মহত্যা হবে নাকি, এটাও? একখানি ফতোয়া টিম দরকাররে, খুব বড় জোড় কয়টা দিনইতো বাকী! ও, শ্যূটিং টিমও দরকার একখানি। স্পট লাইট, মেকআপ আর ক্যামেরাম্যানদের সরগরম থাকা চাই। সংবাদপত্রের লোকগুলোরও থাকা চাই কিন্তু। আম-জনতা নাইবা রলে, তথ্যচিত্র হলেই হয়। আচ্ছা, আত্মহত্যার চিত্রখানি আমায় একটু আগেভাগেই দেখানো কি যায় না? একটু শান্তি পেতুম যে।
আচ্ছা, কোন কবিতা কি লেখা হবে, আমার মৃত্যুর পর? তোরা কি পারবি নে একখানি অখ্যাত বইয়ের ৩ নম্বর পৃষ্ঠায় এ অপভ্রংশের নামখানি তুলে ধরতে? পারবি নে একখানি গান লিখতে? পারবি বি ছন্নছাড়া চেহারার কয়েকশ ফুটের ভাস্কর্য গড়তে? পারবি কি?
আচ্ছা, হেমলক নয়, গ্রেনেট নিয়ে হাজির হ তোরা। মধ্য বুকে নিশান লাগা AK-47 এর নলের। তাও যদি নাইবা পারিস, হিরোশিমা-নাগাসাকির লিটল ম্যান অথবা ফ্যাট ম্যানের একটা এনে দে। পানি ছাড়াই গলাধঃকরণ করি।
প্রশান্তির এক ঘুম দিবো শহীদ মিনারের এ পাদদেশে। একটুখানি শান্তির ঘুম। পারবি কি?