শৈশব থেকেই বেশ ভাল ক্রিকেট খেলতেন। তাই অনেকে মনে করতেন হয়তো ক্রিকেটার হবেন ছেলেটি। স্কুল পাঠ চুকিয়ে কলেজ জীবন শুরুতেই ডাক আসে দেশের অন্যতম সেরা ক্লাব আবাহনী থেকে। টানা তিন বছর খেলেছেন, আবাহনী ক্রিকেট দলে। যদিও জীবনের পরিক্রমায় খেলাধুলা ছেড়ে বিবেকের তাড়নায় যোগ দিলেন সাংবাদিকতায়।
ফরিদুপর জেলার হাবিলী গোপালপুরের সম্ভ্রান্ত খান পরিবারে জন্ম তাঁর। ফরিদপুর শহর আর শহরের আশপাশের গ্রামের আলো-ছায়া আর ধুলো-মাটির কোলে কাটিয়েছেন শৈশব-কৈশোর। ফরিদপুরের ব্যাপিস্ট চার্চ স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু। ফরিদপুর জিলা স্কুলে মাধ্যমিক শেষ করে, ঐতিহ্যবাহি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, স্মাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। ছাত্র জীবনে রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও হানাহানী, ক্ষমতা দখল আর সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিতশ্রদ্ধ হয়ে পাড়ি জমান ইউরোপে। এক পর্যায়ে ভর্তি হন যুক্তরাজ্যের ‘লন্ডন কলেজ অব ম্যানেজমেন্ট-এ।
দেড় বছর পর দেশে ফিরে অনেকটা দায়বদ্ধাতা থেকে যোগ দেন সংবাদিকতায়। শুরুটা হয় ইনকিলাব টেলিভিশন দিয়ে। জাতীয় দৈনিক ইনকিলাবসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সুনামের সাথে কাজ করেছেন।
তার জন্ম ফরিদপুরে হলেও পিতামহের আদি নিবাস মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায়। ব্রিটিশ ইন্ডিয়া, পাকিস্থান ও বাংলাদেশ আমলের সাবেক সরকারী কর্মকর্তা মরহুম আমজাদ হোসেন খান ও আমেনা খানের আট সন্তানের মধ্যে ছোট সন্তান তিনি। বড় ভাই আখতার হোসেন খান বাংলাদেশ সরকারের সচিব হিসেবে পরিকল্পনা, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সহ রাষ্ট্রপতির দফতরে দায়িত্ব পালন করেছেন। মেজো ভাই আতাহার খান দেশের খ্যাতিমান সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিক। আরেক ভাই আফজাল হোসেন খান পলাশ। যিনি ফদিপুরে খুবই জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা।
যাইহোক প্রসঙ্গে আসি। যার কথা বলছি, তিনি বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী বিটসহ না ধরণের সংবাদ সংগ্রহ করলেও এক সময়ে খেলাধুলার সাথে জড়িত থাকার কারণে ক্রীড়া সংবাদের প্রতি রয়েছে তার বিশেষ দুর্বলতা। এ কারণে অনেক আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট কাভার করেছেন।
এরমধ্যে, ২০০৬ সালে জামানিতে বিশ্বকাপ ফুটবল। ইটালিতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব দাবা অলিম্পিয়াড, শ্রীলংকায় দশম ও বাংলাদেশে এগারতম সাউথ এশিয়া গেমস। ২০০৮ এবং ২০১০ এর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ আইপিএল, ইংল্যান্ডে ২০০৯ এর টি টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ, নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট সিরিজ এবং ২০১১ সালে ভারত, শ্রীলংকা ও বাংলাদেশ অনুষ্ঠিত দশম বিশ্বকাপ ক্রিকেট।
সাংবাদিক হিসেবে অন্যান্য ক্ষেত্রে তাঁর কাভার করা ইভেন্টের মধ্যে ২০০৯ সালে ইতালির রোমে বিশ্ব কৃষি ও খাদ্য সম্মেলন। ২০১১’এ সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়, বিশ্ব শ্রম সম্মেলন। একই বছর অস্ট্রেলিয়ার পার্থে সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৬৭তম সাধারন অধিবেশন কাভার করেছেন। এছাড়াও সংবাদ সংগ্রহের জন্য সফর করেছেন, ফ্রান্স, হল্যান্ড, জাপান, ভারত ও পাকিস্তান সহ বিশ্বের নানা দেশে।
আমার দেখা, দুর্নীতি-দুরাচার, হিংসা-বির্দ্বেষ, জর্জরিত সমাজে একজন সাদা মনের মানুষের বাস্তব উদাহরণ তিনি। তিনি আরটিভির বিশেষ প্রতিনিধি ও উপ-প্রধান বার্তা সম্পাদক। পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন জি আকাশ নিউজের (জি মিডিয়া) বাংলাদেশ ব্যুরো প্রধান হিসেবে। ২০০৫ সালে মাঝামাঝি তিনি আরটিভিতে যোগ দেন।
টেলিভিশন সাংবাদিকতায় তিনি এক নতুন দিগন্তের সুচনা করেছেন। সহজ, সাবলীল ও সহজে বোধগম্য ভাষা ব্যবহার এবং শ্রতিমধুর উচ্চারনে বিশেষ পারদর্শী। আর এটা অনুসরণ করে টেলিভিশন সাংবাদিকতা আগামী প্রজন্ম এগিয়ে যাবে অনেক, অনেক দূর।
সদা হাসোজ্জ্বল, সদালাপী ও নিরহংকারী , খুব সহজেই চারপাশের মানুষের মনের মনি কোঠায় স্থান করে নেয়া মানুষটি হলেন রাজীব খান। পুরো নাম রাজীবুল হাসান খান। আজ ২৩ জুলাই, এই মানুষটির জন্ম দিন। বাবা-মার বুক আলো এই দিনে পৃথিবীতে আসেন তিনি। শুভ হোক তার জন্মদিন। বাংলার ঘরে ঘরে জন্ম হোক তোমার। জন্ম হোক রাজীব খানের।
লেখক: আরিফ সাওন, হেড অব নিউজ, বাগেরহাট ইনফো।