রাবেয়ার বিবাহীত জীবনে দু’টি কন্যা সন্তান হলেও তাদের নিয়ে যথেষ্ট সুখী। রাবেয়া স্বামী স্থানীয় বাজারে চায়ের দোকান চালায়। প্রত্যেকদিন দোকান শেষে মেয়েদের জন্য কিছু না কিছু হাতে নিয়ে আসে সে।
রাবেয়ার স্বামী সামছু তার জীবনে স্ত্রী, দুই সন্তান ছাড়া আর দোকান ছাড়া কিছুই নাই। সামছু খুব ছোট বয়সে বাবাকে হারায় মা বেশ কষ্ট করে সামছু তথাকথিত মানুষ করতে না পারলেও বড় করেন। গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে দৈনিক শ্রমিকের কাজ করতেন সামছুর মা। একদিন সামছুকে একা ফেলে চলে যান সামছুর মা। দূর সম্পর্কের এক খালা তার বড় মেয়ের সাথে বিয়ে দেন সামছুকে।
দূর সম্পর্কের এই খালা স্বামী হারান তিনিও অনেক কষ্টে বড় করেন তার দুই মেয়েকে। বড় মেয়ে রাবেয়া। ছোট মেয়ের নাম মোমেনা। রাবেয়ার যখন বিয়ে মোমেনার বয়স মাত্র পাচ বছর। পাচ বছরের মোমেনার কাছে তার দুলাভাই বড় ভাইয়ের মত। সময় অসময় কোলে উঠে পড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন আবদার করত সামছুর কাছে। সময়ের আবর্তে রাবেয়ার মা মারা যান। তখন তার কোলে দুই সন্তান। গ্রামে একা মোমেনার থাকা কষ্ট হয়ে যায় সামছুর সাথে আলোচনা করে রাবেয়া তার একমাত্র বোনকে নিয়ে আসে নিজের কাছে।
কালের আবর্তে একদিন দুই মেয়েকে ছেড়ে কি এক অভিমানে গলায় দড়ি দেয় রাবেয়া। কেউ কিছু বুঝতে পারে না। সামছু তার দুই মেয়ের দায়িত্ব দিয়ে দেয় তার স্ত্রীর একমাত্র বোনকে। সমাজের চারিপাশে শুরু হয় কানা ঘুষা। একদিন স্থানীয় থানার পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যায় সামছু ও তার স্ত্রীর একমাত্র মোমেনাকে। রাবেয়ার দুই মেয়ে হয়ে পড়ে দিশেহারা কাদের কাছে থাকবে। খালা রাগ করলেও, মারলেও ভয় পেতে হত না। স্কুলের স্যারের কাছে বলতে গিয়ে কেদে ফেলল।
স্কুলের স্যার অনেক কষ্ট করে গ্রামের সুশান্ত মুহরীকে ধরে জানতে রাবেয়া আসলে আত্মহত্যা করেনি। মোমেনা ও সামছু পরিকল্পনা করে মেরে ফেলে রাবেয়াকে।
রাবেয়াকে মেরে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। জামিন তো পাওয়া যাবে না। বিচারে ফাসি না হলেও যাবতজীবন হয়ে যাবে। স্যার সাইকেল চালিয়ে আসার পথে চিন্তা করতে থাকেন কি বলবেন রাবেয়ার রেখে যাওয়া ছোট দু’টি মেয়েকে।