সুমন্ত ও তার স্ত্রী কাকলীর ১০ বছরের সংসার। বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে করা হলেও বিয়ের পরে তারা একে অপরকে ভালবেসেছে ভূলে গেছে যে যার অতীত জীবনের কথা।
সুমন্ত একটা বেসরকারী সংস্থায় পরিচালনা পর্ষদে চাকরী করে। আর কাকলী একটি সরকারী স্কুলের শিক্ষক। একটি মেয়ে ৫ বছরের। ফুট ফুটে সুন্দরী। সারাক্ষন তোতা পাখীর মত কথা বলে। সুমন্তর আগে আড্ডা দেয়ার অভ্যাস থাকলেও মেয়ের কারনে তা বন্ধ হয়েছে। চাকরী থেকে ফিরে সোজা বাড়ী মেয়ের কোলে। মেয়ে সারাক্ষন মায়ের মত বকে আদর করে আবার কখনও বন্ধুর মত বলে চল নাচি। কাকলী স্কুল থেকে এসে বাড়ীর কাজে ব্যাস্ত হয়ে যায়। মেয়ে কথার দিনের বেলার সাথী তার ঠাকুরমা।
সুমন্তর জীবনে আগে অনেক মেয়েদের আনাগোনা হয়েছে কখনও মানসিক সম্পর্ক থেকে শারিরীক সম্পর্কে পর্যন্ত এগিয়েছে। কাকলী তার জীবনে আসার পর মেয়েদের দেখে ঠিকই কিন্তু তাদের দুর থেকে।
সুমন্তর অফিস সহকারী হিসাবে নিয়োগ পেল খুব সুন্দর চেহারার মালবিকা। মালবিকার সাথে সুমন্তর অফিসের বড় একটা সময় কাটাতে হয়। এই সময় কাটাতে কাটাতে সে জানতে মালবিকার সংসারের ইতিকথা। মালবিকা বিবাহিত, স্বামী পলাশ একটি এনজিও তে কাজ করেন। ১৫ বছরের বিবাহীত জীবনে কোন সন্তান আসে নি মালবিকার। এই সন্তান না আসায় মালবিকা আর তার স্বামী পলাশের জীবনটাকে অন্ধকার করে আছে। মালবিকা সমস্ত ধরনের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছে। ডাক্তার অভিমত আপনার কোন সমস্যা নেই আপনার স্বামীকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন।
মালবিকা বেশ কয়েকবার তার স্বামীকে বিষয়টি বললও পলাশ এড়িয়ে গেছে। পলাশ মনে করে তার কোন সমস্যায় নাই সব সমস্যা তার স্ত্রী। এ নিয়ে তাদের সংসারে সমস্যা থাকলেও তারা একে অপরকে খুবই ভালবাসে।
এদিকে কাজ করতে করতে মালবিকা তার সমস্যা বন্ধুর মত বিনিময় করেছে সুমন্তর কাছে। সুমন্তর মালবিকার কষ্ট অনুভব করতে পারে। এই অনুভুতির একসময় সুমন্ত ভালবেসে ফেলে মালবিকাকে। একই রকম ভাবে মালবিকা ভালবাসে সুমন্তকে কিন্তু তারা বুঝতে পারে এই ভালবাসায় থেকে অনেক বড় ভালবাসা তাদের সংসার তাদের স্ত্রী, স্বামী, সন্তান। মালবিকা একদিন সুমন্তকে বলে তুমি তোমার ভালবাসার চিহ্ন আমাকে দাও আমাকে, একটি সন্তান দাও। যে আমার ও পলাশের সন্তান নামে পরিচিত হবে। তার দিকে তাকিয়ে আমি তোমার কথা মনে করতে পারব আর আমাদের সংসারটাও ঠিক থাকবে। সুমন্ত তার অস্ফুষ্ট স্বরে সম্মতি জানায়।
মালবিকা বার বার ডাক্তারের কাছে যায় ডাক্তারের একই মত আপনি স্বামীকে আসতে বলেন। মালবিকা বিষয়টি সুমন্তকে জানানয়। সুমন্ত একাকী ডাক্তারের কাছে যায় ডাক্তারের পরীক্ষায় সুমন্ত জানতে পারে সে বাবা হওয়ার ক্ষমতা রাখে না।
সমস্ত পৃথিবী ভেঙ্গে পড়ে সুমন্তর মাথায় ! তাহলে কে তার সন্তান কথা। কে তার বাবা। সুমন্ত বলতে পারে না কাকলীকে। কিন্তু কথার ভালবাসায় সুমন্ত তার বাবা।