ভিজিটরই একটি ওয়েবসাইটের প্রাণ। যেসব সাইটে ভিজিটর নেই সে সাইটের বস্তুতপক্ষে কোন মূল্যই নেই। তাইতো সারা বিশ্বব্যাপী ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনয়নের জন্য চলে নানা রকম চেষ্টা তদবীর এবং গবেষণা।
প্রতিযোগিতামূলক এই সময়ে ওয়েবের ভালো ট্রাফিক অর্থাৎ ভিজিটর পাওয়া একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।
সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে নিজের ওয়েবসাইট কে প্রথম পেজে রাখার জন্য তথা সাইটের ভিজিটর আনার জন্যই আমরা SEO, SMM, SEM করে থাকি। কিন্তু যদি ভালো ও পরিকল্পনামাফিক কিছু কাজ করা যায়, তবে ট্রাফিক পাওয়া কোনো বিষয় নয়। আপনার অনলাইন বিজনেস কে ছড়িয়ে দিতে সঠিক কিছু ট্রাফিকটুল ব্যবহার করতে হবে।
আজ আমি আপনাদের সামনে সেসব কিছু ট্রাফিকটুলের টিপস শেয়ার করব। এগুলো সঠিক ব্যাবহার করে আপনিও আপনার সাইটের ভিজিটর বাড়াতে পারবেন আশা করি।
আর্টিকেল মার্কেটিং:
বর্তমানে যেকোনো ব্লগ বা নিদ্দিষ্ট একটি ওয়েব পেজে মানসম্পন্ন ট্রাফিক আনার সহজ পদ্ধতি হলো আর্টিকেল মার্কেটিং। আর্টিকেলের মানের উপরেই নির্ভর করবে, পাঠক আপনার লেখায় কতোটা সন্তুষ্ঠ ও আকর্ষিত হয়েছেন। আপনার লেখনির মাধ্যমে তাকে আপনার সাইটে আসার মানসিকতা তৈরি করতে পারলেই আপনি আপনার সাইটে ভিজিটর পাবেন। ভালো আর্টিকেল তৈরি করতে হলে আপনাকে কিছু পন্থা অবলম্বন করতে হবে। নীচে সেগুলো দেওয়া হলঃ
► প্রথমে ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ শব্দের একটি ভালো মানের আর্টিকেল লিখুন।
► আটিকেলটিতে প্রাইমারি কিওয়ার্ডকে ৩ বার ও বাকিগুলো রিলেটেড কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন।
► এখন একই বিষয়ে একটি অরিজিনাল আর্টিকেল লিখুন, যেটি ব্যবহাকারী ক্লায়েন্টভেদে ভিন্ন হতে পারে।
► আপনার কননেন্টটি বিভিন্ন সাইটে না দিয়ে শুধুমাত্র আপনার ব্লগে পাবলিশ করুন। এখন আপনার অরিজিনাল কনটেন্টকে রিরাইট করে আর্টিকেল সাবমিশন টুল ব্যবহার করে সাবমিট করতে পারেন। আমি নিশ্চিত এই প্রক্রিয়াটি আপনার অনলাইন মার্কেটিংকে অনেকাংশে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ব্লগ কমেন্ট :
ব্লগ কমেন্টিং অনলাইন মার্কেটিং বা সাইটে ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। ভাল মানের ব্লগ কমেন্টিংয়ের মাধ্যমে ওয়েবসাইটে প্রচুর ভিজিটর পাওয়া যায় এবং শক্তিশালী ব্যাকলিংকও পাওয়া যায়।
আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট রিলেটেড কমপক্ষে ৫টি হাইপেজর্যাংকের ব্লগ নির্ধারণ করুন। সেইসব ব্লগগুলোর নিয়মিত ফলো করে নতুন নতুন আর্টিকেলে কমেন্টের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটের প্রচার করুন। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০টি ভালমানের কমেন্ট করুন। ট্রাফিক বৃদ্ধি পাবে।
ভালমানের একটি ব্লগে সংশ্লিষ্ট ১ টি কমেন্ট থেকে কমপক্ষে ১০ থেকে ৫০ অথবা তারও বেশি ভিজিটর পাওয়া সম্ভব। আপনি সার্চ ইঞ্জিন কে কাজে লাগিয়েই আপনার ব্লগ বা ওয়েব সাইট রিলেটেড ব্লগ কমেন্টিং সাইট খুঁজে পেতে পারে।
নিচের টার্ম গুলো ইউজ করুন রিলেভেন্ট সাইট খুঁজে পেতে…
keyword “powered by wordpress”
keyword “leave a reply”
keyword “leave a comment”
keyword “mail (will not be published)”
keyword “notify me of follow up comments”
“top commenters”
keyword “enable commentluv”
keyword “This site uses KeywordLuv”
keyword “powered by blogengine.net”
KEYWORDS “powered by wordpress” site:.edu
KEYWORDS “leave a comment” site:.edu
KEYWORDS “reply to post” site:.edu
“If you have a TypeKey or TypePad account” keyword
site:.com inurl:blog “post a comment” -”comments closed” -”you must be logged in” “Keyword”
site:.org inurl:blog “post a comment” -”comments closed” -”you must be logged in” “Keyword”
site:.net inurl:blog “post a comment” -”comments closed” -”you must be logged in” “Keyword”
প্রথমে গুগলে সার্চে যান, তারপর উপর থেকে আপনার পছন্দ মত যেকোন একটা টার্ম নিয়ে গুগলে সার্চ করুন। এখানে keyword এর স্থানে আপনার সাইট রিলেটেড কিওয়ার্ড বসান। ব্যাস এখন যেই রেজাল্ট গুলো আসলো সবি রিলেটেড ব্লগ কমেন্টিং সাইট। নিচের ইমেইজটা দেখুন আশা করি ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
গুগলিং করে রিলেভেন্ট ব্লগ কমেন্টিং সাইট খুঁজে বের করা।
ইয়াহু আ্যনসারঃ
আপনার সাইটে ভিজিটর আনার জন্য ইয়াহু আ্যনসার খুবই কার্যকরী। আপনি নিয়মিতভাবে ইয়াহু আ্যনসার সাইটে প্রশ্ন করা এবং উত্তর দেওয়ার মাধ্যমে অংশগ্রহন করলে আপনার সাইটে ভিজিটরের বন্যা বয়ে যাবে, এটি অনেকটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। ইয়াহু আ্যনসার সাইটে কোন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় আপনি আপনার সাইটের লিঙ্ক দিয়ে দিতে পারেন।
ফলশ্রুতিতে আপনার সাইটেও ভিজিটর আসতে থাকবে। ইয়াহু আ্যনসার সাইটে আপনার প্রদত্ত লিঙ্কগুলি ডু-ফলো লিঙ্ক হিসাবে বিবেচিত হবে না। কারন এ সাইটে লিঙ্কগুলিকে নো-ফলো হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু এ লিঙ্কের মাধ্যমে আপনি আপনার সাইটে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর পেতে পারেন।
স্কুইডোঃ
আর্টিকেল লিখে অর্থ উপার্জনের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য সাইট স্কুইডো। সারা বিশ্বব্যাপী এই সাইটটির জনপ্রিয়তা রয়েছে। সুতরাং এই সাইটের ভিজিটর সংখ্যাও প্রচুর। এখানে আপনি যে কোন বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে আর্টিক্যাল লিখতে পারেন। স্কুইডো সাইটে আর্টিক্যালগুলি লেন্সেস (Lenses) নামে পরিচিত। যখনই আপনি এ সাইটে কোন আর্টিক্যাল বা লেন্স পোস্ট করবেন এবং সেটি প্রকাশিত হবে, তখন আপনার আর্টিক্যালের বিষয়বস্তুর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বা সাইট কতৃক নির্ধারিত বিজ্ঞাপনগুলি ঐ পেজে প্রদর্শিত হবে।
ঐ বিজ্ঞাপনগুলি বিভিন্ন প্রোডাক্টের, যেগুলি মূলত আমাজন, ইবে ও অন্যান্য ইকমার্স সাইটের যা স্কুইড তাদের এফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকে। আপনার লেন্সে ঐ বিজ্ঞাপনগুলি প্রদর্শনের মাধ্যমে স্কুইডো যে পরিমান অর্থ আয় করবে তার অর্ধেক এটি আপনাকে প্রদান করবে। আপনি আপনার উপার্জনের টাকা পেপাল বা স্কুইডোর নির্ধারিত অন্যান্য পেমেন্ট সিস্টেমের যেকোন একটির মাধ্যমে তুলতে পারবেন।
ফোরামে অংশগ্রহন করাঃ
আপনি যদি নিয়মিতভাবে ফোরাম পোস্টিং করেন তাহলে এখান থেকেও অনেক ভিজিটর পেতে পারেন। ফোরামে আপনার সিগনেচারে আপনার সাইটের লিঙ্ক ব্যবহার করুন্। অনেক ফোরাম রয়েছে যেখানে আপনি সাইন আপের সাথে সাথেই আপনার সাইটের লিঙ্ক দিতে পারবেন। আবার কিছু কিছু ফোরামে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হলেই আপনার লিঙ্ক গ্রহনযোগ্য হবে। আপনি ফোরাম সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন আপনার সাইটের লিঙ্ক সংযুক্ত সিগনেচার ব্যবহার করতে পারেন। এটি অবশ্যই আপনার সাইটের ভিজিটর বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
গেস্ট ব্লগিং:
ওয়েবসাইটে ভিজিটর পাওয়ার জন্য এবং গুগলের সার্চে টপে আসার জন্য সবচাইতে বড় মাধ্যম গেস্ট ব্লগিং। টেকটিউনস একটি গেস্ট ব্লগিং সাইট। এধরনের সাইটের নিজস্ব কিছু নিয়মিত ভিজিটর বা ট্রাফিক আছে।
সুতরাং এধরনের সাইটে যদি আপনি নিয়মিত লেখেন এবং সেই লেখার মাধ্যমে এসব ওয়েবসাইটের সকল ট্রাফিককে যদি আকর্ষণ করতে পারেন, তাহলে শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটরই বৃদ্ধি পাবেনা, সাথে আপনার কোম্পানীর ব্রান্ডিংও হবে এবং সাথে ফ্রি হিসেবে আপনার নিজেরও ব্যান্ডিং হবে। প্রতি সপ্তাহে একটি করে আর্টিকেল লেখুন এবং ভাল পেজর্যাংকের গেস্টব্লগিং সাইটে সেটি পোস্ট করুন। একটি লেখা থেকে ২-৩টি ব্যাকলিংক খুব সহজে পাবেন।
লিংক বেইট:
লিংক বেইটের মাধ্যমেও চাইলে আপনি ট্রাফিক বাড়াতে পারেন। এগুলো নেটের বা সাম্প্রতিক নিউজের ব্রেকিং নিউজগুলো নিয়ে ছোট পোস্ট, যার সাথে সাধারনত বড় কোন নিউজ সাইটের লিংক যুক্ত থাকে। এগুলো মাঝে মাঝে সাইটের জন্য প্রচুর ট্রাফিক আনতে পারে।
সোশ্যাল-বুকমার্কিং:
নিয়মিত আপনার ওয়েবসাইটের সোশ্যাল বুকমার্ক করুন। কমপক্ষে ২০টি হাইপেজ র্যাংকিং সাইটে বুকমার্ক করুন। খুব সহজে এ কাজটি করা যায়। এটি আপনার ওয়েবসাইট কে গুগলের সার্চ টপে আনতে অনেক সাহায্য করবে। তবে সরাসরি ভিজিটর পেতে খুব বেশি সাহায্য করে না।
সোশ্যাল মিডিয়াঃ
অনলাইন মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়াকে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। গুগলের সর্বশেষ পান্ডা সিস্টেমে আপডেটের সময় জানানো হয়েছে, নতুন এই সিস্টেমে একটি ওয়েবসাইটের মান নির্ধারণে সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো প্রধান ভ’মিকা পালন করবে। এর কারণ হলো, তথ্য শেয়ারিংয়ের জন্য সামাজিক যোগাযোগ সাইট বেশি ব্যবহৃত হয়।
এখানে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ সাইটের নাম দেওয়া হলো-
- Facebook.com
- Digg.com
- Twitter.com
- Stumbleupon.com
- Propella.com
- Youtube.com
- Twitter.com
আশা করি উপরের টিপস গুলো আপনার সাইট কে আশানুরূপ ট্রাফিক পেতে সাহায্য করবে।
আজ এই পর্যন্ত।
ধন্যবাদ।