৫ জানুয়ারী ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবে নির্বাচন নিয়ে সারা দেশের ন্যায় বাগেরহাটেও নেই তেমন কোন নির্বাচনী আমেজ। কারণ নির্বাচনের আগেই জেলার ৪টি আসনের তিনটিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থীরা।
আর একটি আসনে হচ্ছে ব্যালটি নির্বাচন। এটি বাগেরহাট -৪ (মোড়েলগঞ্জ-শরণখোলা) আসন।
মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা এই দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত বাগেরহাট-৪ আসনে ২০টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা মিলে মোট ভোটার ২৫৯৬৬৮ জন। যার মধ্যে যাদের মধ্যে মোরেলগঞ্জে মোট ভোটার ১৮৮৪২২ জন। এর মধ্যে ৯৩১৮২ জন পুরুষ ও ৯৫২৪০ জন মহিলা ভোটার।
আর শরণখোলা উপজেলায় মোট ভোটার ৭১২৪৬ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৫১৪২ জন ও মহিলা ভোটার ৩৬১০৪ জন।
এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থীর বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদন্দিতা করছেন আরো দুই জন আ’লীগ নেতা এবং বিএনএফএর এক প্রার্থী সহ মোট ৪ জন।
মুলত বাগেরহাট -৪ আসনে আওয়ামীলীগের প্রকাশ গ্রুপিং এ কেউ কাউকে ছাড় না দেয়ায় এই আসনেটিতে নির্বাচন হচ্ছে।
বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনিত বর্তমান এমপি ও বাগেরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন (নৌকা প্রতীক), সতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পুলিশের সাবেক অতি. আইজিপি মোঃ আব্দুর রহিম খান (আনারস প্রতীক), মোরেলগঞ্জ পৌর আ’লীগের আহবায়ক ও পৌর মেয়র এ্যাড: এস.এম মনিরুল হক তালুকদারে (টেবিল ঘরি প্রতীক) এবং বিএনএফ মনোনীত প্রার্র্থী মোঃ সাখাওয়াত হোসেন (টেলিভিশন প্রতীক)।
ভোটররা বলছেন, মোট চার প্রার্থী থাকলেও নির্বাচনে মূল প্রতিদন্দিতা হবে তিন আ’লীগ নেতার মধ্যেই। এরই মধ্যে স্থানীয় ভোটারদের আলোচনায় আসছে সতন্ত্র হিসাবে প্রার্থী হওয়া দুই আওয়ামীলীগ নেতাকে দলের জেলা কমিটি থেকে বহিস্কারের বিষটি।
তাদের মতে, বিএনএফএর প্রার্থী হলেও প্রচার-প্রচারন মাঠে নেই তিনি।
এদিকে জেলার তিনটি আসনে নির্বাচনের কোন প্রচারনা না থকলেও নৌকা, আনারস আর টেবিল ঘরি প্রতিকের পোস্টার-লিপলেটের দেখা মেলে মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা (বাগেরহাট-৪) এলাকায়।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, আনারস ও টেবিল ঘরি প্রতিকের প্রচুর পোস্টার ও লিপলেট আছে দুই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। সাথে প্রার্থীদের সাফাই গেয়ে মাকিংয়ের শব্দ। প্রাথীরা ও তাদের কর্মীরা ভোট চাইছেন দ্বারে দ্বারে গিয়ে। কিন্তু ভোটারদের মাঝে নেই কোন উৎসাহ-উদ্দীপনা।
এদিকে বাগেরহাট ইনফো ডটকম এর কাছে নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আসাবাদের কথা জানিয়েছেন প্রতিদন্দিতা করি চার প্রার্থীই।
বিএনএফ মনোনীত প্রার্র্থী মোঃ সাখাওয়াত হোসেন (টেলিভিশন প্রতীক) জানান, তিনি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি।
আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে সতন্ত্র প্রর্থী হিসাবে প্রতিদন্দিতা করি মোঃ আব্দুর রহিম খান বাগেরহাট ইনফোকে তার জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আসাবাদ জানিয়ে বলেন, “বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিয়ে আমি সংকিত।” আ’লীগ মনোনিত প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেনের লোকজন তার কর্মী সমর্থকদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে প্রভাবিত করছেন বলে অভিয়োগ করেন তিনি।
তবে তার আশাবাদ প্রসাশন নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠ নির্বাচন হলে তিনিই বিজয়ি হবেন।
অপর সতন্ত্র প্রার্থী এ্যাড: মনিরুল হক তালুকদারও তার নির্বাচনী প্রচারনায় বাধা প্রদান এবং কর্মী সমর্থকদের প্রতি হুমকি ও ভয়ভিত প্রদর্শনের অভিযোগ করেছেন বর্তমান এমপি ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন বিরুদ্ধে।
এ্যাড: মনিরুল হক তালুকদার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, স্থানীয় ভোটারদের সমর্থন তার সাথে আছে। এজন্য নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।
তবে এই দুই প্রার্থীর কেউই তাদের অভিযোগের ব্যাপারে এখনও লিখিত ভাবে প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশনের কছে কোন জানান নি।
নৌকা প্রতীক নিয়ে এ আসনে প্রতিদন্দিতা করি আ’লীগ প্রার্থী এবং সংসদ সদস্য ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ মূলক অবিহিত করে তা অস্বিকার করেছেন।
বাগেরহাট ইনফোকে তিনি জানান, এলাকায় নৌকার পক্ষে ব্যাপক জন সমর্থন রয়েছে। তার পক্ষে প্রচার প্রচারনায় অংশ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতারাও। এবারের নির্বাচনেও বিপুল ভোটে বিজয়ী হবার আসাবাদ জানান তিনি।
অপরদিকে, বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট-মোল্লাহাট-চিতলমারী) আসনে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী বর্তমান এমপি শেখ হেলাল উদ্দিন, বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া) আসনে বর্তমান এমপি মীর শওকাত আলী বাদশা এবং বাগেরহাট -৩ (রামাল-মংলা) আসনে সাবেক খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা জন্য এরই মধ্যে জেলায় সেনা মোতায়ন করা হয়েছে। কোন রকম আচারণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি পর্যবেক্ষেনের জন্য অতিরুক্ত ম্যাজিস্টেট নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া এরই মধ্যে নির্বচনী এসে পৌঁছেছে নির্বাচনি সামগ্রী।
তিনি জানান, বোববার থেকে মোরেলগঞ্জ এবং ১ জানুযারি থেকে শরণখোলা এলাকায় পোলিং, প্রিজাইডিং এবং সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের ট্রেনিং শুরু হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, এখন প্রর্যন্ত কোন প্রার্থীর পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে কোন অভিযোগ যানান হয়নি। তবে কেউ যেন নির্বাচনী আচারণ বিধি লঙ্ঘন না করে সে বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।