হরতাল-অবরোধ আর রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাগেরহাট-পিরোজপুর ও মোংলা মহাসড়ক দিয়ে অপরাধী চক্র প্রতিদিন আনছে করছে মাদক দ্রব্য।
চলমান অস্থিরতার সুযোগে মাদক ছাড়াও বিভিন্ন অবৈধ সামগ্রী আমদানী করে বিক্রয় হচ্ছে অবাধে।
গোপন সুত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক অস্থিরতাকে পূজি করে এক শ্রেনির অসাধু ব্যবসায়ীরা মাদকদ্রব্য এবং নাশকতামুলক কর্মকান্ডে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী আমদানী করে তাদের ব্যবসাকে চাঙ্গা করতে মাঠে নেমে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে তারা সিমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরা এবং যশোর হয়ে অঞ্চলিক বিভিন্ন রুট থেকে খুলনা হয়ে বাগেরহাট-মোংলা ও পিরোজপুর মহাসড়ককে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে।
চক্রগুলো প্রতিদিন সিমান্তবর্তী সাতক্ষীরার বেনাপোল ভ্রমরা, নাভারন এলাকা থেকে এসব আমদানী করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিচ্ছে। দিনের পর দিন নেশা জাতীয় দ্রব্য আনায়ন করে তা প্রত্যান্ত অঞ্চলে পৌঁছে দিচ্ছে। এসব আমদানীর কাজে তারা দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে ভিক্ষুক প্রতিবন্ধি শিশুদের ব্যবহার করছে। বিনিময়ে তাদেরকে পারিশ্রমিক বাবদ ৫ শত হতে ১হাজার টাকা প্রদান করে থাকে। ফলে অনেক সময় বহনকারীরা আটক হলেও তারা অপরাধী চক্রের সঠিক নাম ঠিকানা বলতে পারছে না।
সুত্রগুলো জানায়, অপরাধী চক্রগুলো তাদের মাদকদ্রব্য এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় পৌছাতে নসিমোন, করিমুন, মটরসাইকেল, ইজিবাইক সহ বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করে থাকেন। তারা প্রথমে যশোর থেকে বিভিন্ন উপায় নিয়ে এসে খুলনার জিরো পয়েন্ট, গল্লামারী, লবনচোরা, রূপসাঘাট এলাকার বিভিন্ন আস্তানায় ঘাটি করে। পরে রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচির সুযোগে মালবাহী ট্রাক, পি-কাপ, মাইক্রোবাস, ভাড়াই চালিত মটরসাইকেল, নছিমন-করিমনে বহন করে থাকে।
মাঝে মধ্যে বাস কাউন্টার ম্যেনদের সহযোগীতায় যাত্রীবাহী বাসের গোপনস্থনে বহন করে থাকে। প্রতি দিন ভোর ৬ হতে ৭ টা, দুপুর ১২ হতে ১টা এবং রাত ১০ হতে ১১ টা কে নিরাপদ মনে করে। তবে অপরাধীরা হরতালের দিন এবং শুক্রবার ও শনিবার দুপুর ১২ হতে ২টা পর্যন্ত বেশি নিরাপদ মনে করে। কারন ওই সময়টায় সড়ক মহা-সড়কে পুলিশি কোন প্রকার চলাচলে বাধা বা তল্লাশী করেনা।
বাগেরহাট ইনফোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাগেরহাট জেলা সদরের মাজার এলাকাসহ যাত্রাপুর, সিএন্ডবি, চুলকাঠি, ফকিরহাট সদর, বিশ্বরোডের মোড়, ফলতিতা-বটতলা, কাটাখালী, শ্যামবাগাত, লখপুর, বেতাগা, শুভদিয়া, রামপালের ফয়লা, গৌরম্বা, রূপসার ফেরিঘাট মোরেলগঞ্জের দৈবজ্ঞহাটি, পুটিখালী, পোলেরহাট, আমতলা, সাহাবাড়ির পোল, মহিশপুরা, কচুয়ার বাধাল বাজার, সাইনবোর্ড বাজার, কাঠালতলা, মাদার তলা, ভাষা বাজার, গোয়ালমাঠ, খেজুরতলা সহ বিভিন্ন স্থানে এসব ব্যাবসা চলছে।
এসব এলাকায় ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করছে
ভ্যান-চালক মাহম্মুদ, চা-দোকানদার জালাল, গ্যারেজ কামরুল, ইকরাম, ফেন্সি রবি, মাদক আজিম, গাজা বিজয়, রিজিয়া বুড়ি, পাগলী, হোসেন কানা, গাজা ফিরোজ, ভেজাল মোস্তফা, সেকেন্দার সেকেন, কামাল, ভাগ্নে মিন্টু, গাজা আলম, গাজা আনোরা, গাজা এনছান, ফেন্সি ভাগনে, গাজা ছালাম, মুখপোড়া বাবুল, লতিফ সহ শতাধীক ব্যাক্তিরা মাদক ব্যাবসা করছে।
জেলার বিভিন্ন থানা পুলিশ রাজনৈতিক সহিংসতা মোকাবেলা করতে ব্যাস্ত থাকায় সড়ক বা মহসড়ক গুলোতে সর্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওই অপরাধী চক্ররা তাদের ব্যাবসা এখন প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে।
এমনকি তারা গাজা হেরোইন ফেন্সিডিল ইয়াবা টেবলেট এবং নাশকতামুলক কর্মকান্ডে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী।
উল্লেখ্য, পুলিশ, র্যাব ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন যানবাহনে তাল্লাশি এবং অভিযান চালিয়ে কিছু সংখ্যাক মাদকদ্রব্য সহ চুনোপুটিকে আটক করলেরও বরাবরই ধরা ছোয়ার বাইরে থাকছে রাঘব বোয়ালরা। স্বচেতনমহল মনে করে সড়ক পথে অপরাধী চক্রের এই দামামা বন্ধ করা না হলে এ অঞ্চল মাদকের স্বর্গ রাজ্যে পরিনত হবে।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।