বাগেরহাটের সুন্দরবন সংলগ্ন রামপাল উপজেলার সাপমারী-কাটাখালী এলাকায় কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান বন্ধ ও সুন্দরবনকে রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার শেখ হেলাল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের সামনে কৃষি জমি রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ ও আলোর পথযাত্রী নামে দুটি সংগঠন যৌথভাবে এই মানববন্ধন কর্মসুচির আয়োজন করে।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শতশত জমি মালিক তাদের অধিগ্রহণ করা জমি ফিরিয়ে দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
এসময় বক্তারা বলেন, এখানে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান হলে সুন্দরবন ও সংলগ্ন লোকালয়ের উপর অপূরণীয় পরিবশগত ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। এলাকার মাটি, পানি ও বাতাসের দূষণসহ লবনাক্ততা ও তাপমাত্রা বাড়বে।
তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্জ্য, কয়লা ধোয়া পানি, কয়লার ভেতরে থাকা সালফার, লৌহসহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান এবং কেন্দ্র থেকে নি:স্বরিত কার্বন ডাই অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের মত বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস থেকে এ সব দূষণ সৃষ্টি হবে। ফলে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের জীব বৈচিত্রসহ এলাকার মানুষের কৃষি ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়বে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে সবুজ বেষ্টনী। তাই সরকারকে তার সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসার আহবান জানান তারা।
তানা হলে আগামীতে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান বন্ধের দাবি আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
সুন্দরবনের পরিবেশ, প্রাণী ও জীববৈচিত্র রক্ষায় স্থানীয় মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং দেশের বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের দাবিতে ঢাকা থেকে রামপালের উদ্দেশ্যে লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তা আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর রামপালে এসে শেষ হবে।
মানববন্ধনে অংশনেন রামপাল উপজেলা কৃষি জমি রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি সুশান্ত দাস, আলোর পথযাত্রীর সমন্বয়ক রায়হান সিদ্দিকী, সদস্য মুসাফির মোর্শেদ এবং তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির বাগেরহাট জেলা শাখার সদস্য সচিব ফররুখ হাসান জুয়েলসহ ওই এলাকার জমি মালিকরা।
উল্লেখ, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সাপমারি ও কাটাখালী এলাকায় বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের মাত্র সাড়ে নয় কিলো মিটার দূরে বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের সাথে যৌথভাবে দুটি কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। প্রায় এক হাজার তিন শত কুড়ি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্যে এক হাজার ৮৩৪ একর কৃষিজমি অধিগ্রহণ করা হয়। ২০০৯ সালে ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কোম্পানী এবং বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
০৪ জুলাই ২০১৩ :: নিউজ করেসপন্ডেন্ট,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।