মহাসেনের খবর অজানা, শতাধিক মাছ ধরা ট্রলার এখনও সমুদ্রে!
বাগেরহাট ও পিরোজপুরের শতাধিক ট্রলার এখনও গভীর সমুদ্রে অবস্থান করছে। এসব ট্রলারের জেলেরা এখনও জানেন না মহাসেন ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে! মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে এসব জেলেদের কাছে ঝড়ের খবর পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট উপকূলীয় মৎস্যজীবী সমিতি সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী।
এদিকে, সকাল থেকেই আকাশ মেঘে ঢাকা, মাঝে মাঝে নামছে বৃষ্টি। যে কারণে চরম আতঙ্কে রয়েছে এখনও সমুদ্রে থাকা জেলে পরিবারগুলোর সদস্যরা।
সিডর ও আইলা বিধ্বস্ত উপকূল জেলা বাগেরহাটে এবার ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপকূলবাসী। মহাসেন ধেয়ে আসছে জেনে অসহায় ও দরিদ্র মানুষ সোমবার রাতে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
আবার অনেকে ঘূর্ণিঝড়ের কোনো আগাম বার্তা পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন। মঙ্গলবার সকালে বাগেরহাট উপকূলের বিভিন্ন মৎস্য বন্দরে মাছ ধরা ট্রলার নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার রাধাবল্লভ গ্রামের পিয়ারা বেগম(৫৫) জানান, “টিভিতে সংবাদ শুনে আমার মেয়ে ও নাতিদের নিয়ে একটি পাকা ভবনে আশ্রয় নিয়েছি।”
এদিকে, যেকোনো সময় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কায় বাগেরহাট জেলায় ২০১টি সাইক্লোন শেল্টার, ১১টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে ও ৮৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি বাতিল বলবৎ থাকবে বলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন।
বাগেরহাট উপকূলীয় মৎস্যজীবী সমিতি সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী জানান, মঙ্গলবার সকালে বাগেরহাট উপকূলের বিভিন্ন মৎস্য বন্দরে মাছ ধরা কয়েক’শ ট্রলার নিরাপদ আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। তবে, গভীর সমুদ্রে থাকা মাছ ধরা অনেক ট্রলারের জেলেরা ঝড়ের খবর পাননি। গভীর সমুদ্রে অবস্থানরত ট্রলারগুলি মোবাইল নেটওর্য়াকের কারণে সংবাদ দেওয়া সম্ভব হয়নি। যারা সংবাদ পেয়েছে তারা ইতোমধ্যে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছেন।
তবে মহাসেন আঘাত হানতে পারে এ আসংকায় নতুন করে কোন জোলে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাচ্ছে না বলে আমাদের নিশ্চিত করেন তিনি।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলী বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে বাগেরহাট জেলার জন্য ইতোমধ্যে ১শ মেট্রিক টন চাল ও ৩ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।
বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. বাকির জানান, স্বাস্থ্য বিভাগ ইতোমধ্যে তিনটি বিশেষজ্ঞ দলসহ ৮২টি মেডিকেল দল গঠন করা হয়েছে। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় মহাসেন আঘাত হানার আশঙ্কায় ইতোমধ্যে ছোট ছোট ক্যাম্পের বনরক্ষীদের রেঞ্জ অফিসগুলোতে চলে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মহাসেন আরও শক্তি সঞ্চয় করে উপকুলের দিকে ধেয়ে আসায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরের জন্য ৭ নাম্বার বিপদ সংকেত এবং মংলা সমুদ্র বন্দরের জন্য ৫ নাম্বার সংকেত দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১৫.০৫.১৩ :: ইনজামামুল হক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।