• শেখ সাদী বিন সাঈদ
বাস্তুতন্ত্রে বা প্রাকৃতিক অলংকারে, দুটোতেই পাখিদের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে সেই পাখিদের আবাসস্থল হুমকিতে পড়ছে প্রতিনিয়ত।
বাগেরহাট শহরে পাখিদের বেশ আনাগোনা ছিলো কয়েক বছর আগেও। ডিসি বাংলো, পুরাতন কোর্ট চত্বর, ডাকবাংলো এলাকা দিনরাত থাকতো পাখির কলকাকলিতে মুখরিত। এই এলাকায় স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন পানকৌড়ি, কানি বক, নিশিবক, গো-বক। তবে গত কয়েক বছর ধরে তাদের উপস্থিতি কমেছে অনেকটাই। ডিসি বাংলোর সামনের ও আশেপাশের প্রায় ১৫/২০ টি গাছে বসবাস করতো পাখিগুলো। প্রায় দেড় দু হাজার পাখি এখানে প্রতিদিন সন্ধ্যায় এসে অবস্থান নিতো, এবং প্রজনন মৌসুমে বাসা বেঁধে বংশবৃদ্ধি করতো।
তবে কয়েক বছর আগে পাখির মলের গন্ধ ও নোংরা হবার কারণে গাছের ডাল কেটে পাখিদের অপসারণ বা গৃহহীন করে তাড়িয়ে দেবার চেষ্টা করা হয়। পাখিরা নাছোড়বান্দা, যেখানে তাদের জন্ম, বেড়ে ওঠা ও পরবর্তী প্রজন্মকে বড় করার আবাসভূমি, তারা সে জায়গা ছাড়তে নারাজ। বর্তমানে পুরাতন কোর্ট এর সামনের বটগাছ , ম্যাকফারসন লাইব্রেরির সামনের মেহগনি গাছ ও ডাকবাংলোর ভিতরের দুটি ঝাউগাছে কোনমতে টিকে আছে তারা।
উল্লেখ্য, এই পাখিরা এখানে বিশ্রাম নেয় ও বংশবৃদ্ধি করে। তাদের আশ্রয়হীন করে মানুষের জন্য পাখির মলের গন্ধ থেকে পরিত্রাণ একান্তই প্রয়োজনীয় ছিলো ভেবে কর্তাব্যক্তিরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বর্তমানে রাধাবল্লভ গ্রামের নদীর পাড়ের একটি ছোট জঙ্গলে অধিকাংশ পাখি আশ্রয় নিয়েছে। তার আশেপাশেও গড়ে উঠছে বসতবাড়ি, পাখিরা সেখানেও আবাসন হুমকিতে রয়েছে।
এছাড়া এই পাখিরা সাধারণত উত্তর দিকের বিল ও খালে খাদ্য সংগ্রহে যায়। সেখান থেকে ফিরতে বাঁধে আরেক বিপত্তি। বিশেষত দড়াটানা ব্রিজের পাশ থেকে যাওয়া ইলেকট্রিসিটির তারের জন্য বাঁধা পায় তারা। কেউ দল থেকে ছিটকে পড়ে, কেউবা তারে আঘাত পেয়ে নিচে ভূপাতিত হয়। সব মিলে তারা ভালো নেই।
আবাসন সংকট, খাদ্য সংকট ও শিকার হবার ঝুঁকি তাদের দিনে দিনে আরো বিপন্ন হওয়ার দিকে এগিয়ে দিচ্ছে। যথাপোযোগ্য পদক্ষেপ ও পাখিদের অভয়ারণ্য ঘোষণা করে তাদের সংরক্ষেণে আরো জোরদার হওয়া উচিত আমাদের।
লেখক: শিক্ষার্থী।
স্বত্ব ও দায় লেখকের…
এসআইএইচ/বিআই/২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩