নিজস্ব সংবাদদাতা, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
সুন্দরবনে জবাই করা হরিণের ৩০ কেজি মাংসসহ তিন শিকারিকে গ্রেপ্তার করেছে বন বিভাগ। এ সময় শিকারিদের পেতে রাখা ফাঁদে আটকে পড়া ২২টি হরিণ উদ্ধার করে অবমুক্ত করা হয়।
সোমবার (৪ মে) গভীর রাতে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের টিয়ারচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বনবিভাগ হরিণের মাংসসহ এই তিন চোরা শিকারিকে গ্রেপ্তার করে।
সে সময় চোরা শিকারিদের ব্যবহৃত ২টি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, একটি ডিঙি নৌকা ও ৭০০ ফুট হরিণ শিকারের ফাঁদ জব্দ করে বনকর্মীরা। এই ঘটনায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তারদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার তালুকের চরদুয়ানি গ্রামের জয়নাল খাঁর ছেলে আবুল খাঁ (৪২), একই উপজেলার কাঁঠালতলি গ্রামের হরিপদ মিস্ত্রীর ছেলে সঞ্জয় মিস্ত্রী (৩২) ও খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার পানখালি গ্রামের মালেক শেখের ছেলে আসাদুল শেখ (২৫)।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই তিনজন সুন্দরবনের তালিকাভুক্ত শীর্ষ চোরা শিকারি মালেক গোমস্তা গ্রুপের সদস্য। পাথরঘাটার চরদুয়ানি এলাকার ওই শীর্ষ শিকারি অভিযানের সময় পালিয়ে যাবে। তবে অভিযানে শিকারি দলের হাত থেকে সুন্দরবনের একটি চিত্রল হরিণের পাল রক্ষা পেয়েছে, বলছে বন বিভাগ।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) বেলায়েত হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, শরণখোলা রেঞ্জের টিয়ারচর এলাকায় অবৈধভাবে ঢুকে একদল চোরা শিকারি ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করছেন, এই খবর পেয়ে বনকর্মীরা সেখানে অভিযানে যান। চোরা শিকারিরা বনকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া করে তিনজনকে ধরা হয়। তবে এ সময় অন্যরা পালিয়ে যান।
পরে তাঁদের ব্যবহৃত ২টি ট্রলার ও নৌকায় তল্লাশি চালিয়ে জবাই করা হরিণের ৩০ কেজি মাংস, শিকারিদের ব্যবহৃত ২টি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, ১টি ডিঙিনৌকা ও ৭০০ ফুট ফাঁদ জব্দ করা হয়। এই মাংস দুটি শিকার করা হরিণের। নদীতে ফেলে দেওয়ায় ওই হরিণের চামড়া ও মাথা পাওয়া যায়নি।
ডিএফও বলছেন, ‘পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বন বিভাগের তালিকাভুক্ত শীর্ষ চোরা শিকারি মালেক গোমস্তাও ছিলেন। অভিযানে টিয়ারচরে চোরা শিকারিদের পেতে রাখা ফাঁদে আটকে পড়া ২২টি হরিণ ছাড়িয়ে বনের অবমুক্ত করা হয়েছে।’
মালেক গোমস্তার দল সুন্দরবন থেকে হরিণের একটি বড় চালান শিকার করে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল বলে ধারণা ওই বন কর্মকর্তার। ওই শীর্ষ চোরা শিকারির বিরুদ্ধে অন্তত পাঁচটি মামলা রয়েছে।
ডিএফও বেলায়েত বলেন, মালেক গোমস্তাকে ধরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বন বিভাগ চেষ্টা করছে।
এসএস/আইএইচ/বিআই/০৫ মে, ২০২০