নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত প্রথম রোগীর বাড়িসহ আশপাশের ১৬টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি ফরিদপুরের ভাঙা উপজেলা থেকে কদিন আগে বাড়ি আসেন।
তাঁর বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলা সদরের পাটরপাড়া গ্রামে। প্রায় ৩৫ বছরের ওই যুবক ভাঙা উপজেলার একটি সমজিদে ইমামতি করতেন।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ২ টায় বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির আনুষ্ঠিকভাবে জেলায় করোনা শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তাঁর জ্বর বা অন্য তেমন তোন উপসর্গ ছিলনা। মাদারীপুর সংলগ্ন ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকা থেকে আসায় বাড়ি কোয়ারেন্টাইনে থাকা ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ।
এরআগে গতকাল মঙ্গলবার খুলনা মেডিকেল কলেজের করোনা পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা বাগেরহাটের চিতলমারী একব্যক্তির করোনা পজেটিভ পাওয়ার কথা জানিয়ে ছিলেন।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, আক্রান্ত ব্যাক্তি ফরিদপুর জেলার ভাঙা উপজেলা থেকে কদিন আগে বাগেরহাটে আসে। তিনি অন্য যেসব মানুষের সংস্পর্শে গিয়েছিলেন তা যাচাই করার কাজ চলছে।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিতলমারী সদরের পাটরপাড়া গ্রামে করোনা শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির বাড়িসহ ১৬টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মারুফুল আলম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত ব্যাক্তি ও তাঁর আশপাশের মোট ১৬টি বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে। বুধবার জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, পুলিশ সুপারসহ উর্ধতনরা ওই ব্যাক্তির বাড়িতে গিয়ে রোগীর সাথে কথা বলেছেন। তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তিনি সুস্থ্য আছেন।’
ওই ব্যক্তি তাঁর নিজ বাড়িতে আছেন এবং সুস্থই আছেন জানিয়ে ইউএনও আরও বলেন, চলতি মাসের ৯ তারিখে ফরিদপুরের ভাঙা এলাকা থেকে ওই ব্যক্তি বাড়িতে আসনে। তিনি সেখানে একটি মসজিদে ইমামতি করতেন।
অবশ্য আক্রান্ত ব্যক্তি মাদারীপুর থেকে এসেছিলেন বলে গতকাল উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল। তাঁর করোনার তেমন কোন উপসর্গ না থাকলেও বাইরে থেকে আসায় ১১ তারিখে ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।
একই দিনে ওই ব্যক্তিসহ চিতলমারীতে অন্য জেলা থেকে আসা মোট ৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে, চিতলমারীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলাতে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকাসহ অন্য জেলা থেকে আসা ৭৮৫ জনকে নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। তাদের বাড়িতে লাল পতাকাও টানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।
বাগেরহাটে এক জনসহ গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ২১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এক চিকিৎসকসহ আরও চারজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫০ জন।
বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২১৯ জনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে এখন আক্রান্তের মোট সংখ্যা বেড়ে ১২৩১ জন হয়েছে। গত এক দিনে নতুন করে সেরে উঠেছেন আরও ৭ জন। সব মিলিয়ে মোট ৪৯ জন এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
এসআই/আইএইচ/বিআই/১৫ এপ্রিল, ২০২০