বাগেরহাটে টিসিবি’র পেঁয়াজ বিক্রি শুরু। স্থানীয় বাজারে প্রভাব নেই, দাম চড়া।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম
পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হবার দীর্ঘ সময় পর বাগেরহাটে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়। ৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনতে টিসিবির ভ্রাম্যমাণ দোকানে ভিড় করেন নানা বয়সী নারী-পুরুষ।
কোন প্রকার প্রচার প্রচারণা ছাড়াই বাগেরহাটে টিসিবি’র এই পেঁয়াজ বিক্রি শুরুর কিছু সময়ের মাঝেই উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। ৪৫ টাকা দামে জন প্রতি এক কেজি করে পেঁয়ার বিক্রি করা হলেও দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে ছিলেন আদালত চত্বরে অনেক আইনজীবীরাও।
তবে সরকারি উদ্যোগে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির কোন প্রভাব পড়েনি স্থানীয় বাজারগুলোতে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, টিসিবি পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে কোন প্রকার প্রচার প্রচারণা ছাড়াই। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খোলা ট্রাকে করে আকষ্মিকভাবে তারা পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে। অন্যদিকে বাজারে সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২১০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে।
বাড়তে থাকা পেঁয়াজের দাম গত দুই সপ্তাহ ধরে বাগেরহাটের স্থানীয় বাজারে সংকট অযুহাতে আরও অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এই সমস্যার দূর করতে টিসিবি খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির উদ্যোগ নেয়
বাগেরহাট আদালতে মামলার কাজে আসা ব্যক্তিরা বলেন, দুপুরে হঠাৎ করে দেখি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানুষের ভিড়। সামনে এগিয়ে দেখি ৪৫ টাকা কেজি দরে মিশরীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। লাইনে দাড়িয়ে এক কেজি পেঁয়াজ কিলাম।
প্রচার প্রচারণা ছাড়াই লাইনে যে পরিমান মানুষের ভিড় তাতে সবাই পেঁয়াজ কিনতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে। তাঁদের এই উদ্যোগ নিন্ম আয়ের মানুষের জন্য ভাল, অল্প দামে এখানে আমরা পেঁয়াজ কিনতে পেরে ক্রেতারা দারুণ খুশি। কিন্তু টিবিসির এই পেঁয়াজ বিক্রির উদ্যোগের প্রচার প্রচারণা দরকার ছিল বলে মনে করেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ত্রেতা অভিযোগ করেন, বাগেরহাটের বিভিন্ন হাট বাজারে এখনো ২২০ থেকে ২৫০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। দুপুরে মানুষের মুখে শুনলাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে টিসিবি খোলা বাজারে বিদেশী পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে। টিসিবি কোন প্রচার প্রচারণা ছাড়াই এভাবে পেঁয়াজ বিক্রি করলে স্থানীয় বাজারে তার কি প্রভাব পড়বে বুঝতে পারছি না।
টিসিবি’র খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উর্দ্ধতন কার্য নির্বাহী মো. রবিউল মোর্শেদ বলেন, স্থানীয় বাজারে চলমান পেঁয়াজের দাম ও সংকট দূর করতে বাগেরহাটে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য বাগেরহাট জেলায় তুরস্ক থেকে আমদানি করা ৩ মেট্রিকটন পেঁয়াজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। টিসিবির যেহেতু জেলা শহরে কোন কার্যালয় নেই তাই স্থানীয় প্রশাসনই ঠিক করবে এই পেঁয়াজ কোথায় কতটুকু বিক্রি হবে।
প্রচার প্রচারণা ছাড়াই খোলা বাজারে এভাবে পেঁয়াজ বিক্রিতে জেলায় চলা পেঁয়াজ সংকট ও চড়ামূল্যে কি প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রচার প্রচারণার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের। বাগেরহাটে প্রতিদিন এক মেট্রিকটন পেঁয়াজ খোলা বাজারে বিক্রি হবে।
‘৪৫ টাকা কেজি দরে জন প্রতি ১ কেজি করে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। এতে জেলায় প্রতিদিন এক হাজার মানুষকে পেঁয়াজ দেয়া যাবে। কয়েকদিন এভাবে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হলেই স্থানীয় বাজারে দাহিদা কমে যাবে। তাতে বাজারের চড়ামূল্য পড়তে বাধ্য হবে।’
বাগেরহাট কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের জেলা কৃষি বিপনন কর্মকর্তা জি এম মহিউদ্দিন বলেন, সোমবার সকালে স্থানীয় বাজারে বিদেশী পেঁয়াজ ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকা এবং দেশিটা ২৪০-২০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এজি/আইএইচ/বিআই/২ ডিসেম্বর, ২০১৯