মহিদুল ইসলাম | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের শরণখোলায় সুন্দরবন সংলগ্ন সাউথখালীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে।
বুধবার (৪ জুলাই) ভোর রাতে পাউবো’র ৩৫/১ পোল্ডারের প্রায় দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভাঙন শুরু হয়। বিভিন্ন জায়গায় নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে সাউথখালী ইউনিয়নের ৮টি গ্রামে। তলিয়ে গেছে আমন ধানের বীজতলা, কয়েকশত পুকুর ও মাছের ঘের।
আকষ্মিক ভাবে বাঁধের বিভিন্ন অংশ ভাঙনে আতঙ্ক বিরাজ করছে ঘূর্ণিঝড় সিডর আক্রান্ত সাউথখালী ইউনিয়নের বগি, গাবতলা, চালিতাবুনিয়া, খুড়িয়াখালী, সোনাতলা, তাফালবাড়ী, উত্তর ও দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার।
এলাকাবাসী জানান, বুধবার ভোর রাতে উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বলেশ্বর নদী সংলগ্ন বগী থেকে গাবতলা আশার আলো মসজিদ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার পাউবোর বাঁধ সম্পূর্ন নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। জোয়ারের পানি এখন ওই ইউনিয়নের ৮টি গ্রামে ওঠানামা করছে। ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
বগী গ্রামের জলিল খলিফা ও রউফ হাওলাদার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, আমন ধানের জন্য চাষিরা জমিতে বীজধান ফেলেছে। অনেকে পাত করতে ধান ভিজিয়ে রেখেছে। কিন্তু জোয়ারের পানিতে ক্ষেত তলিয়ে গেছে। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত পুকুর।
একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক জানান, পানিতে ধান ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় বীজতলা তৈরী অনিশ্চিতা দেখা দিয়েছে। জোয়ারের পানি না নামলে এ বছর আমন চাষ ব্যহত হবে।
সাউথখালীতর তাফালবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক আব্দুল মালেক রেজা বলেন, পাউবোর ৩৫/১ পোল্ডারের বাঁধের কাজ মূল অংশে কাজ না করে কম ঝুঁকিপূর্ন এলাকাকে অগ্রাধিকার দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় আগে কাজ শুরু করলে গ্রামগুলো এখন জোয়ারে প্লাবিত হতো না।
সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় সিডরে সব হারানো এই জনপদের মানুষ বলেশ্বরের ভাঙনে আবারও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে বাঁধের ভাঙন রোধ করে নতুন বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ না করলে চরম দুর্ভোগে পড়বে এই এলাকার মানুষ। বড় বিপর্যয় দেখা দিবে এখানকার কৃষিতে।
জানতে চাইলে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সুরক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।
শরণখোলার নির্মাণাধীন বাঁধের তদারকীর দায়ীত্বে নিয়োজিত প্রকৌশলী শ্যামল দত্ত বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় সাময়িকভাবে রিং বাঁধ দিয়ে ভাঙন রোধ ও রাক্ষা কাজ শুরু করা হবে। নতুন করে ভাঙন রোধ করা গেলে জোয়ারের সময় লোকালয়ে আসা বলেশ্বর নদের পানি ঢেকানো সম্ভব হবে।
এমআই//এসআই/বিআই/০৪ জুলাই, ২০১৮