স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তার কথিত প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার (২১ মে) দুপুরে বাগেরহাটের অতিরিক্ত দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এ দণ্ডাদেশ দেন।
তিন বছর আগে জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরণ ইউনিয়নের দক্ষিণ কুমারিয়াজোলা গ্রামের প্রয়াত আইয়ুব আলী শেখের ছেলে আল-আমিন শেখ ওরফে আলাম হত্যার দায়ে আদালত ওই রায় দেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি দুইজনকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন আল-আমিন শেখের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪৬) এবং একই গ্রামের মিরাজ উদ্দিন শেখের ছেলে মো. শাহাজাহান শেখ (৬০)। শাহাজাহান ফাতেমার কথিত প্রেমিক।
আদালত একই মামলায় অপর একটি ধারায় (২০১) হত্যার পর লাশ গুমের অপরাধে ওই দুইজনকে ৭ বছর কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা; অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে কারাদন্ডাদেশ দেন।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সাইফুল শেখ নামের একজনকে খালাস দিয়েছে আদালত।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার নথির বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁশুলী এ্যাডভোকেট সীতা রাণী দেবনাথ বলেন, আল-আমিন শেখের ছেলে শেখ মোহম্মদ আলী ঢাকার কেরাণীগঞ্জে থাকেন। ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ সকালে ছেলের বাসা থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন আল-আমিন। ঢাকায় কর্মরত ছেলে বাবার সন্ধান না পেয়ে কেরাণীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন।
“পুলিশ এই ঘটনায় আল-আমিনের ব্যবহৃত মোবাইলফোন ট্র্যাকিং করে তার অবস্থান বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পায়। এরপর তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি স্বামীকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।”
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ফাতেমার সাথে প্রতিবেশি শাহজাহানের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ স্বামী ঢাকা থেকে বাড়িতে এলে তিনি (ফাতেমা) তার প্রেমিক শাহজাহানকে সাথে নিয়ে ঘুমের মধ্যে বালিশ চাপা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে বলে জবানবন্দিতে জানান ফাতেমা।
পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী ওই বছরের ১৭ জুন নিখোঁজ আল আমিন শেখের বাড়ির রান্নঘরের পেছনে মাটির নিচে পুঁতে রাখা লাশ পাওয়া যায়।
ওইদিনই নিহতের ভগ্নিপতি মো. মোবারক আকন বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্তভার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডিকে দেওয়া হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা (সিআইডি) পুলিশ পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম ২০১৬ সালের ১০ জুন নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম ও তার কথিত প্রেমিক শাহাজাহান শেখ এবং স্থানীয় সাইফুল শেখের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালত মামলার ১৭ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার ওই আদেশ দেন।
এইচ//এসআই/বিআই/১৭ মে ২০১৮