স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
ভালোবাসার মানুষটির সাথেই সংসার বেঁধেছিলেন। হয়তো স্বপ্নও ছিল অনেক। কৈশরে বাবাকে হারিয়ে যে সংগ্রামী জীবনের শুরু; তাতে যেন এক দিশা মিলেছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তার সবই মিলিয়ে যেতে থাকে।
স্বপ্নের মৃত্যু হয় আগেই। তাই কেবল ভালোবাসার মানুষটি বা তার সংসার নয়; জগৎ সংসারটাই ছাড়তে চাইছিলেন।
হলোও ঠিক তাই। ৬ দিন ধরে দুর্বিসহ যন্ত্রণা সয়ে পৃথিবীর ‘মায়ার বাঁধন’ ছাড়লেন কমলা বেগম।
গেল ৩ মার্চ গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন কমলা বেগম ওরফে নূরী (২০)। আগুনে পুড়ে যায় তার শরীরের প্রায় ৬০ ভাগ।
স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ‘নির্যাতন সইতে না পেরে’ শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে, অভিযোগ কমলার ভাই-এর।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার (৯ মার্চ) দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
কমলা বেগমের বাড়ি বাগেরহাটের শরণখোলায়। উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামের মোতালেব হাওলাদারের ছেলে ইলিয়াস হাওলাদার তার স্বামী। প্রায় দেড় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। আরমান নামের তিন মাসের একটি সন্তান আছে তাদের।
উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের প্রয়াত মোক্তার খলিফার মেয়ে কমলা চট্টগ্রামে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। কমলার ভাই মো. আল-আমিন খলিফা বলেন, চট্টগ্রামে আমর বোন যেখানে থাকতো ওই এলাকার একটি হোটেলে কাজ করতো ইলিয়াস। আগে বিয়ে থাকার কথা গোপন করে সে আমার বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
পরে নিজেরা বিয়ে করে এবং বছর খানেক আগে চট্টগ্রাম ছেড়ে বাড়িতে গিয়ে বসবাস শুরু করে।
সেখানে স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুড়িসহ পরিবারের লোকেরা কমলাকে নানাভাবে নির্যাতন করতো। যা নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে, বলেন আল-আমিন।
কমলার ভাইয়ের অভিযোগ, স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকদের নির্যাতন সহ্য করতে না করতে পেরে সে আত্মহত্য করতে যায়।
অগ্নিদগ্ধ ওই গৃহবধূর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেশরণখোলা থানার ওসি মো. কবিরুল ইসলাম বলেন, শনিবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নিহত কমলা বেগমের স্বামী ইলিয়াস ও তার শ্বাশুড়ি তাসলিমা বেগম খুলনা মেডিকেলই আছে।
এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়রেরে প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে আসামীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
এইচ//এসআই/বিআই/০৯ মার্চ, ২০১৮