স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ধানকাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। এসময় নারীসহ আরও অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুঁটিখালি ইউনিয়নের সোনাখালি গ্রামে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় ঘটনাস্থলের পরিদর্শন করেছেন।
নিহতরা হলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলার চালিতাবাড়ি গ্রামের তোরাব শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখ (৪৮) ও একই গ্রামের শাহজাহান শেখের ছেলে পলাশ শেখ (৩২)। নিহতরা রহিম খানের পক্ষের।
তবে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য এটা সংঘর্ষ নয়, এটা একপক্ষের পরিকল্পিত হামলা বলে দাবি করেছেন।
তবে এই সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলতে উভয়পক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাৎক্ষনিকভাবে পাওয়া যায়নি।
আহতরা হলেন- কবির শেখ, মজিবর শেখ, হেমায়েত খান, জাহিদ শেখ, শিউলী ও নাজমা। এদের মধ্যে প্রথম দুজনকে আশংকাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য চারজনকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ইব্রাহিম শেখ ও পলাশ শেখকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। দুজনের শরীরেই ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাদের মৃত্যু হয়।
আহতদের মধ্যে কবির শেখ ও মজিবর শেখ নামে দুজনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ডা. কামাল হোসেন।
সংঘর্ষের ঘটনা এক পক্ষের দাবি করে মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুঁটিখালি ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম খান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, সোনাখালি গ্রামের আব্দুর রহিম খানের সাথে প্রতিবেশি শহীদুল খানের এক বিঘা জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে চলতি আমন মৌসুমে রহিম খান আমনের চাষ করে। শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ প্রতিপক্ষ শহীদুল খান ১২/১৪ জন শ্রমিক নিয়ে ধান কাটতে যায়।
‘এসময় রহিম খানের আত্মীয় স্বজন ধানকাটার খবর পেয়ে তাদের বাঁধা দিতে যায়। এসময় শহীদুলের লোকজন তাদের কাছে থাকা ধারালো ছুরি কাচি নিয়ে হামলা চালায়।’
এতে রহিম খানের দুই আত্মীয়ের মৃত্যু হয়। আহত হয় অন্তত ৭/৮ জন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই জমির বিরোধ মেটাতে চলতি মাসে পুঁটিখালি ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহচান মিয়া শামীম দুই পক্ষকে নিয়ে বসতে চাইছিলেন। সেই অবস্থায় শহীদুল খান এই হামলা চালালেন বলে দাবি তার।
পুঁটিখালি ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহচান মিয়া শামীম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, জমি নিয়ে রহিম ও শহীদুল খানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধ নিয়ে বসার কথা ছিল। কিন্তু তারা কেন কার উসকানিতে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ল তা বুঝতে পারছিনা।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ধানকাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন তা পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। এঘটনায় জড়িতজড়িত সন্দেহে ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এজি//এসআই/বিআই/২২ ডিসেম্বর, ২০১৭