স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হেপী বড়ালের মেয়ে অদিতি বড়ালের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
ঘটনার ৩০ ঘণ্টা পর রোববার রাতে নারী এমপি হেপী বড়াল বাদী হয়ে বাগেরহাট মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। তবে ওই পুলিশ এখনো হামলার ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
গত শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাগেরহাট শহরের আমলাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান থেকে বাসায় ফেরার পথে আওয়ামী লীগ দলীয় ওই এমপির মেয়েকে ছুরি মেরে পালিয়ে যায় এক দুর্বৃত্ত। পরে তাঁকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসা চিকিৎসা শেষে ওই রাতেই তাঁকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সংসদ সদস্য হেপী বড়ালের বাড়ি জেলার চিতলমারী উপজেলায়। বাগেরহাট শহরের শালতলা এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন তিনি।
হেপী বড়াল বলেন, সেদিন সন্ধ্যায় এক যুবক এসে আমার মেয়েকে জিজ্ঞাসা করে, ‘তুমি কি হেপী বড়ালের মেয়ে।’ পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর মেয়ের পেটে ছুরিকাঘাত করে চলে যায়। প্রায় আট মাস আগে একবার রাতে শালতলায় তাঁর বাসায় ঘুমন্ত অবস্থায় দুর্বৃত্তরা জানালা দিয়ে অদিতিকে কোপ মারে। ওই সময় তাঁর পা কেটে যায়। ১২টি সেলাই দিতে হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সালের ২০ আগস্ট প্রকাশ্য দিবালোকে নারী সাংসদ হেপী বড়ালের স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা কালিদাস বড়ালকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনার দীর্ঘ এক যুগ পর জড়িত ব্যক্তিদের কয়েকজনকে আদালত মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন সাজা দেন। ওই মামলায় কয়েকজন খালাস পান। নিম্ন আদালতে ন্যায়বিচার পাননি দাবি করে হেপী বড়াল উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে খালাস ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার পরিকল্পনা করেছে। ওই মামলার এক আসামি আলমগীর সিদ্দিকী সম্প্রতি অপর এক মামলায় যশোর থেকে বাগেরহাট আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। সেখানে তিনি কালিদাস বড়াল হত্যা মামলার খালাস ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সঙ্গে পরামর্শ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। এরই ধারাবাহিকতায় পরপর দুইবার তাঁর মেয়ে অদিতি বড়ালের ওপর এই হামলা হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন তিনি।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাতাব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করেছি। গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। এ হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শিগগিরই তাদের শনাক্ত করে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করা হবে।’
এমপির পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে তাঁর বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
সাংসদের মেয়ের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগ। আজ সোমবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক রতন নন্দী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অদিতি বড়ালের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।
এজি//এসআই/বিআই/১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭