স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
লম্বায় প্রায় ২০ ফুট। মুখটি অনেকটা করাতের মতো। স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ‘খটক’ মাছ হিসেবে। গবেষকেরা বলেন ‘করাতি হাঙর’। ইংরেজি Saw Fish।
বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে বিশাল আকৃতির একটি করাতি বা খটক মাছটি ধরা পড়ে ২ নভেম্বর। শনিবার (৪ নভেম্বর) বিক্রির জন্য বাগেরহাটের শরণখোলা মৎস্য আড়তে আনা হয় মাছটি। এক হাজার টাকা কেজি দরে খটক মাছটি কেটে বিক্রি করা হয়।
এই খটক মাছ রান্না করে খেলে দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসার, হৃদ্রোগ ও যক্ষ্মা ভালো হয়—এমন বিশ্বাসের স্থানীয় লোকজনের। সেই বিশ্বাসের জায়গা থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন স্থান থেকে মাছ কিনতে শরণখোলা মৎস্য আড়তে ছুটে যান লোকজন।
জেলেদের জালে ধরা পড়া খটক মাছটির ওজন প্রায় ২০ মণ। তবে এ মাছ খেলে মানুষের শরীরে বাসা বাঁধা দুরারোগ্য ব্যাধি নিরাময় হওয়ার বিষয়টিতে বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন গবেষক ও স্থানীয় মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
মাছটির বিক্রেতা ব্যবসায়ী কবির হোসেন আড়তদার বলেন, ‘২ নভেম্বর সাগরে মাছ ধরার সময় খুলনার জেলেদের জালে বিশাল আকৃতির খটক মাছটি ধরা পড়ে। আমি দেড় লাখ টাকায় মাছটি কিনে নেই। পরে মাছটি শরণখোলায় নিয়ে এলে স্থানীয় লোকজন তা দেখতে ছুটে আসেন। শরণখোলা বাজারে মাছটি আনার পর—এই সংবাদ মাইকিং করে স্থানীয়দের জানানো হয়।’
কবির হোসেন জানান, মাছটি কেটে বর্জ্য ফেলে দেওয়ার পর প্রায় ১৪ মণ মাছ পাওয়া গেছে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত প্রায় ২২৫ কেজির মতো বিক্রি হয়ে গেছে। বাকি মাছ বিক্রির জন্য ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আজ রোববারের মধ্যে সব মাছ বিক্রি হয়ে যাবে বলে মনে করছেন কবির হোসেন। শরণখোলা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এই মাছ কিনতে ক্রেতারা এসেছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নিয়ামুল নাসের বলেন, দেশে দুই জাতের করাতি হাঙর আছে। এ মাছ হাঙর-জাতীয় রাক্ষুসে মাছ। এটা বিপন্ন একটি প্রজাতি। সমুদ্রের তলদেশে বসবাস করে।
তিনি বলেন, এটি খেলে অসুখ সারে—এ কথার কোনো ভিত্তি নেই। তবে সামনের নাক অনেক দামে বিক্রি হয়। মাছটির যকৃতের তেল ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
শরণখোলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, এ মাছ খেলে ক্যানসার ভালো হয়—এ কথার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তবে সামুদ্রিক এ মাছে প্রচুর মিনারেল ও খনিজ লবণ রয়েছে, যা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী।
এইচ//এসআই/বিআই/০৪ নভেম্বর, ২০১৭