স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
নিম্নচাপের কারণে তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
কৃষি বিভাগের হিসেবে, গত শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে থেকে শনিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে বাগেরহাট শহরের অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট। অনেক এলাকায় পানি উঠে বসত বাড়িতে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার মৎস্য ঘের।
বাগেরহাট শহরের খারদ্বার এলাকার সাকিব সিকদার বলেন, বৃষ্টির কারণে দুদিন ধরেই ঘরের চারপাশ পানিতে থৈ থৈ অবস্থায় ছিল। শক্রবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে বৃষ্টির পানি ঘরের মধ্যে উঠে যায়। সারা রাত আমরা খাটের উপর উঠে বসে ছিলাম। পানি উঠে গেছে রান্নার চুলাতেও।
জেলা সদরের বেমরতা ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া এলাকার ইয়াসিন হোসেন বলেন, দড়াটানা নদী তীরে আশ্রায়নে আমার ৪০টি পরিবারের বসবাস। বেড়ি বাঁধের বাইরে থাকায় জোয়ারের পানিতে দুদিন ধরে ঘরবাড়ি ডুবে আছে। কোন রকমে শুকন খাবার খেয়ে দিন পার করছি আমরা।
শহরের রাহাতের মোড়, লোকাল বোর্ড ঘাট, মেইন রোড, বাসবাটি, আলীয়া মাদ্রাসা রোড, খারদ্বার, সাহাপাড়াসহ অধিকাংশ এলাকার রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে।
টানা বৃষ্টি আর জোয়ারে পানিতে প্লাবিত হয়েছে জেলার তিন সহস্রাধীক মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
জেয়ারের পানির চাপে জেলা সদরের কাড়াপাড়া ইউনিয়নের একটি স্লুয়েজ গেট ভেঙে পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, ডুবে গেছে পাঁচশতাধিক মাছের ঘের।
সদর উপজেলার বাদেকাড়াপাড়া গ্রামের স্বপন শেখ বলেন, ধার দেনা করে দুই বিঘা জমিতে ৮০ হাজার টাকা মাছ ছেড়ে ছিলাম। বৃষ্টি আর জোয়ারে পানির চাপে ঘেরের সব মাছ ভেসে গেছে।
পানিবন্দী বিভিন্ন এলাকার মানুষের মাঝে শুক্ন খাবার বিতরণ করেছেন জনপ্রতিনিধরা।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. জিয়া হায়দার চৌধরী বলেন, টানা বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন এলাকার ঘের তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ ঘেরের আইল এখন পানি ছুই ছুই। আরও বৃষ্টি হলে এসব ঘেরও তলিয়ে যেতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের বাগেরহাট কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আবতাব উদ্দিন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে এখনও ফসলের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে জলাবদ্ধতা ও বৃষ্টি অব্যহত থাকলে রোপা আমনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
কচুয়ায় গাছ পড়ে ৩ ঘন্টা রাস্তা বন্ধ:
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ড-কচুয়া সড়কে গাছ পড়ে প্রায় তিন ঘন্টা সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল। শনিবার সকালে গাছ পড়ে দুটি বিদ্যুতের খুটিও ভেঙ্গে যায়। এত উপজেলার অধিকাংশ এলাকা দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকে।
এজি//এসআই/বিআই/২০ অক্টোবর, ২০১৭