স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
টানা বৃষ্টি ও অমাবস্যার জোয়ারে অস্বাভাবিক পানির চাপে বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় হাজারও পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে পাঁচ শতাধিক মাছের ঘের। পানির নিচে দেড় হাজার হেক্টর জমির আমন ধানের বীজতলা।
সপ্তাহ ধরে চলা টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। পানিতে তলিয়ে গেছে বাগেরহাট পৌরশহরের রাস্তাঘাট। বিঘ্নিত হচ্ছে মংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজ।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে খুব প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না; রাস্তাঘাটে যানবাহনও তুলনামূলক কম চলছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া, শিংড়াই, দেওয়ালবাটি, যাত্রাপুর, বারুইপাড়া, বিষ্ণুপুর, পাটরপাড়া, ষাটগুম্বুজ, বাগমারা এলাকা এবং রামপাল, মংলা, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, ফকিরহাট চিতলমারী ও কচুয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব এলাকার প্রায় হাজারও পরিবার। চুলায় পানি জমে যাওয়ায় অনেক পরিবার রান্না করতে পারছে না।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) জোয়ারে ভৈরব নদের পানি সদর উপজেলার হাড়িখালি, পোলঘাট, কুড়ামারা, বৈটপুর এলাকায় বাড়ি ঘরে পানি উঠে পড়েছে।
সদর উপজেলার পোলঘাট গ্রামের মো. মুরাদুল ইসলাম বলেন, জোয়ারে ভৈরব নদের পানি রাস্তা উপচে আমাদের বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। এছাড়া গত এক সপ্তাহের টানা বর্ষণে বসত ঘর ও বাগানে পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
মাঝিডাঙ্গা গ্রামের জরিনা বেগম বলেন, বাড়ি উঠানে হাঁটু পানি জমে রয়েছে। ছেলেমেয়েরা পানির মধ্যে নামতে পারছেনা। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া হায়দার বলেন, বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জেলা সদর ও চিতলমারিতে অন্তত পাঁচশ ঘের তলিয়ে গেছে। পানি ছুঁইছুঁই করছে প্রায় সকল ঘেরগুলোতে। তাই চাষীরা তাদের ঘেরের বাঁধ মেরামত করছেন এবং বাঁধের উপর নেট দিয়ে মাছ আটকানোর চেষ্টা করছেন।
বৃষ্টির পানিতে জেলার অধিকাংশ ফসলের মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় ব্যপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাগেরহাট কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন বলেন, গত এক সপ্তায় বাগেরহাট জেলায় প্রায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বৃষ্টির পানিতে কৃষি জমির বীজতলা, সবজি এবং পানের বরাজ তলিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, জেলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর পানের বরজ ও আমন ধানের বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে যা সম্পূর্ণ নষ্ট হওয়ার আশংকা করছেন।
এজি//এসআই/বিআই/২৫ জুলাই, ২০১৭