স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপানী পরীক্ষার ফলাফলে টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা।
কোচিং সেন্টারের সাথে জাড়িত কিছু শিক্ষক ও শিক্ষা অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারির মাধ্যমে এই দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে পরীক্ষার খাতা পূন:মূল্যায়নের দাবি অভিভাবকদের।
সম্প্রতি বৃত্তি বঞ্চিত কয়েক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বিষয়টি তুলে ধরে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। যার প্রেক্ষিতে অভিযোগের বিষয়ে শুনানী শুরু করেছেন ইউএনও নূরুল হাফিজ।
তবে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এদিকে আগামী ৭ জুন দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি করবেন ইউএনও।
লিখিত অভিযোগকারীদের একজন মলয় কিশোর বিষ্ণু বলেন, আমার মেয়ে অঙ্কিতা বিষ্ণু শহরের সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। সে তার ক্লাশে মেধা তালিকায় দ্বিতীয়। ২০১৬ শিক্ষাবর্ষে সে খুবই ভাল পরীক্ষা দেয়। যাতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাবে বলে আশা ছিল। তার চেয়ে পিছনে থাকা অনেক শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছে অথচ আমার মেয়ে বৃত্তিই পায়নি। যা আমাকে হতবাক করেছে।
‘পরে জানতে পারি শিক্ষা অফিসের কিছু কর্মকর্তা কর্মচারি অভিভাবকদের সাথে যোগসাজস করে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে অযোগ্য ও কম মেধাবি ছেলে মেয়েদের বৃত্তি পাইয়ে দিয়েছেন।’
আরেক অভিভাবক নাসরিণ আক্তার বলেন, তার মেয়ে ফারিন ফারিয়া তিশা খুবই ভাল পরীক্ষা দিয়েছিল। বৃত্তি না পেয়ে অনেকটা মানষিকভাবে বিপর্যস্ত। যারা টাকার বিনিময়ে কোমলমতি শিশুদের সাথে প্রতারণা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নিতে হবে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলার ১৭ জন অভিভাবক গত ২ মে সদরের ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ করে খাতা পূন:মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ করা অভিভাবকদের বলেন, আমাদের সন্তানেরা বৃত্তি পায়নি তাতে কষ্ট নেই, তবে ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার পূনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য জড়িতদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানাচ্ছি।
তবে বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অশোক কুমার সমাদ্দার বলেন, টাকার বিনিময়ে কাউকে বৃত্তি পাইয়ে দেয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। মেধা তালিকায় যারা ভাল করেছে তারাই বৃত্তি পেয়েছে।
বাগেরহাট সদরের ইউএনও নূরুল হাফিজ বলেন, বৃত্তি বঞ্চিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেছি। অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য শুনেছি। এখানে অন্যায় হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। আগামী ৭ জুন শুনানির পরে এ ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ্যা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, এধরণের অনিয়মের সাথে কোচিং বাণিজ্যে জড়িত কিছু প্রাথমিক শিক্ষাকদের নাম আসায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি কোচিং সেন্টারের সাথে জড়িত যে সকল শিক্ষক এ ধরনের দালালির সাথে জড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান ইউএনও।
এজি/এইচ//এসআই/বিআই/৫ জুন, ২০১৭