স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের শরণখোলায় এক যুবকের গোপনাঙ্গে ইট ঝুলিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে উঠেছে আওয়ামী লীগ দলীয় এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে; এ ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে শরণখোলা থানায় দায়ের করা মামলায় েবলা হয়েছে, অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে গত ৯ এপ্রিল উপজেলার খোন্তাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খাঁনের নির্দেশে এ বর্বর নির্যাতন চালানো হয়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিষয়টিকে তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন খোন্তাকাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খাঁন।
পুলিশ জানায়, এক যুবককের গোপণাঙ্গে ইট ঝুলিয়ে নির্যাতনের কিছু ছবি গত দু-তিনদিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নজরে এলে ঘটনার তদন্তে নেমে নির্যাতনের সত্যতা পায় শরণখোলা থানা পুলিশ।
এর পেক্ষিতে, পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে সোমবার বিকেলে খোন্তাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন খাঁনসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে শরণখোলা থানায় একটি মামলা করেছেন।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলেন, উপজেলার মধ্য বানিয়াখালী গ্রামের আব্দুর রব হাওলাদের ছেলে রেজাউল করিম (২৫) ও পশ্চিম বানিয়াখালী গ্রামের আবু হানিফ মুন্সীর ছেলে নূর হাসান মুন্সী (২২)।
মামলার বরাত দিয়ে শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল জলিল জানান, কয়েক মাস আগে মুঠোফোনের মাধ্যমে শরণখোলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা এক তরুণীর (১৭) সঙ্গে পার্শবর্তি মোরেলগঞ্জ উপজেলার ফুলহাতা গ্রামের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের সূত্রধরে গত ৯ এপ্রিল সকালে ওই যুবক মেয়েটির সাথে দেখা করতে তার বাড়ির এলাকায় আসেন।
বেলা পৌনে ১২টার দিকে স্থানীয় কয়েক যুবক ইউনিয়নের মধ্য বানিয়াখালী গ্রামের শহিদ নামে এক ব্যক্তির চায়ের দোকানের সামনে অপরিচিত ওই যুবককে আটক করে ইউপি চেয়ারম্যানকে খবর দেন। চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খাঁন সেখানে এলে আটকে রাখা রাখা যুবকের বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগ তোলা হয়।
পরে ইসমাইল হোসেন নামে এক গ্রাম পুলিশকে (চৌকিদার) দিয়ে ওই যুবকের গোপনাঙ্গে ইট ঝুলিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন চেয়ারম্যান। এই দৃশ্য দেখেছেন বানিয়াখালি গ্রামের কয়েকশ। এর কয়েক ঘন্টা পরে চেয়ারম্যান অর্থের বিনিময়ে ওই যুবককে ছেড়ে দেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওসি আব্দুল জলিল বলেন, বিষয়টি ফেইসবুকে ভাইরাল হলে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তে সত্যতা মেলায় শরণখোলা থানার এসআই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অঙ্গহানির মাধ্যমে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছে।
মামলার বাদী এসআই সাইফুল বলেন, প্রাথমিক তদন্তের পর গ্রেপ্তার ওই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিনসহ ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান দাবি করেন ওসি।
তবে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন খাঁনের দাবি ওই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃ্ক্তা নেই। তাছাড়া আমি সেখানে উপস্থিতও ছিলাম না। এলাকার ওই ঘটনাটিকে ইস্যু করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে একটি চক্র।
এজি/এইচ//এসআই/বিআই/১৭ এপ্রিল, ২০১৭