ব্রেইন বসিয়ে রাখা যেমন ঠিক নয়, তেমনি অতিরিক্ত চাপে রাখাও ক্ষতিকর। খাবার, পরিবেশ এবং অভ্যাসও ব্রেইনের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
শুধু মাত্র অভ্যাসবশত প্রতিনিয়ত আমরা এমন কিছু কাজ করে থাকি যা আমাদের ব্রেইনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। এমন ১০টি ক্ষতিকর বিষয়ে সতর্ক হবার জন্য জেনে নেওয়া যাক সেই অভ্যাস গুলো-
১। সকালে নাশতা না করাঃ
আমরা অনেকেই ব্যস্ততার কারনে সকালের নাশতা না করেই বাসা থেকে বের হয়ে যাই। কিন্তু এই অভ্যাসটা খুব খারাপ। কারণ সকালে নাশতা না করলে রক্তে শর্করার পরিমান কমে যায়, ফলে আমাদের ব্রেইনে পর্যাপ্ত শর্করা তথা পুষ্টি পায়না। এতে করে ধীরে ধীরে ব্রেইন মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই ব্যস্ততা সত্ত্বেও সকালের নাশতা করতে ভুলে যাবেন না।
২। অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণঃ
অনেক সময় আমরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণ করি। ধারণা করা হয় মাঝে মাঝে এরকম অতিরিক্ত ডায়েট কি আর হবে! কিন্তু ধারণাটা ভুল। কারণ অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণের অভ্যাস আমাদের ব্রেইনের রক্তনালীর ইলাস্টিসিটি নষ্ট করে দেয় ফলস্বরূপ অনেক ধরনের মানসিক সমস্যার উৎপত্তি হয়। তাই সর্বদা সচেতন হোন এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণ এব অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
৩। ধূমপানঃ
ধূমপান নানা রোগের অন্যতম কারণ। ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব বলে শেষ করে যাবেনা। তাই যারা ধূমপান করেন তাদের জন্য সতর্কবার্তা ধূমপানে কেবল ফুসফুস ক্যান্সার নয় বরং এতে করে ব্রেইন সংকুচিত হয়ে যায় ফলস্বরুপ আলঝেইমার নামক স্মৃতিবিলোপকারি রোগের উদ্ভব হয়।
৪। অতিরিক্ত মিষ্টি গ্রহণঃ
অনেকের ধারণা মিষ্টি বেশি খেলে ব্রেইন ভাল হয়। কিন্তু আসলে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল না। অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে সেটা আমিষ ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের পরিপাক; শোষনে বাধা সৃষ্টি করে যা ব্রেইনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং ব্রেইনের বিকাশ সাধনের অন্তরায়। তাই অতিরিক্ত মিষ্টি নয় পর্যাপ্ত ও পরিমিত মিষ্টি গ্রহন করুন।
৫। বায়ু দূষনঃ
বায়ু দূষনের জন্য আমাদের ব্রেইনের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায়। কারণ বায়ু দূষনের ফলে অক্সিজেন সমৃদ্ধ বাতাস আমাদের ব্রেইনে যেতে পারে না। ফলে ব্রেইন ধীরে ধীরে পুষ্টির অভাবজনিত কারণে স্বাভাবিক কার্যকারি ক্ষমতা হারাতে থাকে। তাই বায়ু দূষণ যুক্ত পরিবেশ থেকে দূরে থাকুন এবং বায়ু দূষন রোধে নিজে ও অন্যকে সচেতন করুন।
৬। নিদ্রাহীনতাঃ
ঘুম আমাদের ব্রেইনের বিশ্রামের জন্য জরুরি। তাই পর্যাপ্ত ঘুম ব্রেইন কোষের স্বাভাবিক কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই যারা দীর্ঘদিন যাবৎ নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন কিংবা কাজের ব্যস্ততার জন্য ঘুমানোর সময় পাচ্ছেননা তাদের জন্য বলছি, নিদ্রাহীনতা আমাদের ব্রেইনের কোষের মৃত্যুর জন্য দায়ী। সুতরাং পর্যাপ্ত ঘুমকে কেবল সময় নষ্ট হিসেবে নয় বরং ব্রেইনের বিশ্রামের জন্য দরকারি হিসেবে নিন।
৭। ঘুমানোর সময় মাথা আবৃত করাঃ
ঘুমাতে যাবার পূর্বে মাথা খোলা রেখে ঘুমানো ব্রেইনের জন্য উপকারি। কারণ মাথা আবৃত করে ঘুমালে কার্বনডাই অক্সাইড এর পরিমান ঘনীভূত হয় এবং অক্সিজেনের পরিমান কমে যায়। যা পরবর্তিতে ব্রেইনের মারাত্বক ক্ষতিসাধন করে।
অনেকে লেপ, কাথা বা চাদরে মাথা মুড়ে ঘুমান। এতে ব্রেইনের ক্ষতি হয়।
৮। অসুস্থতার সময় অতিরিক্ত কাজঃ
যখন আমরা অসুস্থ হই তখন আমাদের উচিত কোন পরিশ্রমি কাজ অথবা পড়াশুনা থেকে বিরত থেকে আমাদের ব্রেইন কে বিশ্রাম দেয়া। তা না হলে অসুস্থতার সময় অতিরিক্ত চাপ আমাদের ব্রেইনের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় ফলস্বরূপ ব্রেইনের দীর্ঘমেয়াদী মারাত্বক ক্ষতিসাধন হয়।
৯। চিন্তা না করাঃ
বেশি বেশি চিন্তা করুন, ব্রেইন কোষের উদ্দীপনার জন্য চিন্তা-ভাবনা করা অত্যন্ত জরুরি। যত বেশি সৃষ্টিশীল চিন্তয়া মনোযোগ দিতে পারবেন, ততবেশি আপনার ব্রেইন কোষ উদ্দীপিত হবে। আপনি আরো বেশি দক্ষ ও মনোযোগি হতে পারবেন যেকোন কাজে। আর চিন্তাহীন ব্রেইন ধীরে ধীরে সংকুচিত হয় ব্রেইনের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।
১০। কথা না বলাঃ
অনেকেই চুপচাপ থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু অতিরিক্ত চুপচাপ ব্রেইনের জন্য ক্ষতিকর। কারণ আপনি যত বেশি বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় অংশ নিতে পারবেন সেটা আপনার ব্রেইনের স্বাভাবিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অত্যান্ত উপকারি। তাই চুপচাপ নয় বরং কার্যক্ষেত্রে বেশি বেশি আলোচনায় অংশ নিয়ে আপনার ব্রেইনকে সতেজ রাখুন।
তথ্য সূত্র: ইন্টারনেট