স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
শরীরে ভুল ইনজেকশন পুশ করায় নুরুল ইসলাম নামে বাগেরহাটে এক মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বাগেরহাট জেলা উন্নয়ন সম্বনয় কমিটির সভায় অভিযোগ উত্থাপিত হলে সিভিল সার্জন ঘটনার তদন্তের জন্য চার সদস্য বিশিষ্টি একটি কমিটি গঠন করেছেন।
বাগেরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সমীর কান্তি পালকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাঃ প্রদীপ কুমার বকসী, জেলা পরিসংখ্যানবিদ বাসির আহমেদ, বাগেরহাট ঔষুধ তত্বাবধায়ক (ড্রাগ) ফারজানা সপ্নায় বৈশাখী।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. অরুন চন্দ্র মন্ডল বলেন, ভুল ইনজেকশন পুশ করায় এক মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর অভিযোগ ওঠায় ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, ভুল ইনজেকশন দেওয়ার ঘটনায় জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম তরফদার (৬৫) বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নের বানিয়াগাতি গ্রামের প্রয়াত মোক্তার আলী তরফদারের ছেলে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি অসুস্থ হলে তার মেয়ে পারভিন বাগেরহাট শহরের লঞ্চঘাট এলাকার মেইন রোডের ইউনিক ফার্মেসী থেকে চিকিৎসকের ব্যবস্থা পত্র দেখিয়ে ইনজেকশন নেন।
জানা গেছে, ব্যবস্থা পত্রে ইনজেকশনের নাম SONAXA থাকলেও ফার্মেসী থেকে ভুলে SUXA ইনজেকশন দিয়ে দেয়। ইনজেকশন নিয়ে বাড়ী ফিরে আসে তাপু পুশ করতে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক হেলাল উদ্দিনকে ডাকা হয়। রাত ৮টার দিকে ওই পল্লী চিকিৎসক মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের শরীরে ইনজেকশন পুশ করলে কিছুক্ষণের মাধ্যে তিনি মৃত্যুও কোলে ঢলে পড়েন।
পরে স্বজনরা তাকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকের কাছে ব্যবস্থা পত্র অনুযায়ী ভুল ইনজেকশন পুশের বিষয়টি ধরা পড়ে।
তাৎক্ষনিক ইউনিক ফার্মেসীতে ওই ব্যবস্থা পত্রটি আসা হলে ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ইনজেকশনটি ভুল দেয়া হয়েছে বলে ফার্মেসীর মালিক শিব কুমার বাবু স্বীকারও করেন।
চিকিৎসকদের ব্যবস্থা পত্র স্পষ্ট করে লেখার বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার মাঝেই এমন ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাগেরহাটের সাধারণ মানুষ।
তবে, এবিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কাছে মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের পরিবারের কেউ মুখ খুলতে রাজি হয়নি।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান খান বলেন, এ খবর পেয়ে রাতেই বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। শুক্রবার জুমার নামাজের পর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের মরাদেহ রাষ্টীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।
এএটি/এসআই/বিআই/১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭