• উজ্জল পোদ্দার
ছেলে বেলা পাঠ্য বইয়ের অনেক বিষয়ই পড়তে ভালো লাগতো না। এক প্রকার না বুঝেই পড়তাম।
তবে, বিষয়গুলোর তাৎপর্য আছে বলেই সিলেবাসে সেগুলোকে দেয়া হয়েছে। যদিও যা শেখানোর উদ্দেশ্যে দেয়া হয়েছে, তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যাহত হচ্ছে বলে আমার ধারনা।
সত্যি বলতে কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া এতদিন সিলেবাসের অধিকাংশ বিষয় এমন ভাবে আমার সামনে উপস্থাপিত হয়েছে যেন তাতে ধারণা হয়েছে সেগুলোর GPA মান ছাড়া অন্য কোন মানে নাই।
সেগুলো কেবল অক্ষরের পর অক্ষরের সমষ্টি মনে হয়, তাতে উপলব্ধির কিছুই নাই।
‘ভালো রেজাল্ট’ করার পেছনে এটা খুব ভালো ব্যাখ্যা যে ‘তুমি কতটুকু দায়িত্ববান তোমার কর্তব্যে, রেজাল্ট হচ্ছে তার প্রমাণ।’ তাই খারাপ রেজাল্ট মানেই সে দায়িত্বে অবহেলা করেছে।
তবে যারা আমাদের শেখাচ্ছেন, তাদের দায়িত্ব ও আন্তরিকতা পরিপুর্ন আছে তো ! সে প্রশ্নটা কার কাছে করব?
ব্যাপারটা এমন হয়েছে যে রবীন্দ্রনাথ হলে তার সমালোচনা করা যাবে না। কিন্তু সঠিক আছে না বেঠিক ভাবে চলছে ক্লাস পদ্ধতি তা বোঝার ক্ষমতা প্রায় সব ছাত্রের আছে। জিজ্ঞেস করলে যে কোন কেউ বলতে পারবে, সে ক্লাসে কি শিখল আর কতটূকু তাকে মুখস্ত করতে হল।
অল্প কয়েকজন ব্যাতিক্রমী মানুষ ব্যাতিত অনেকে আছেন যারা ছাত্রদের উন্নত মস্তিস্ক নির্মানের সারথী হতে এখনও পারছেন না।
কোন একটা বইয়ের কয়েক পৃষ্ঠার ফটোকপি বা google search-এর প্রথম পাতা থেকে পাওয়া পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইড এগুলো দেখলে মনে হয় ঐ বিষয়ের জ্ঞানের গভীরতা এবং মমত্ববোধের পরিবর্তে ‘GPA-এর দায়িত্ববোধ’ চারপাশে বেড়ে গেছে।
আশ্চর্যজনক ভাবে আমারা সেটাই মেনে নিয়ে দিনের পরে দিন হেঁটে চলেছি, পরীক্ষার পর পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছি।
আচ্ছা, মেধাটা কী? মেধা কি আকাশ থেকে পড়ে? নাকি চর্চার মাধ্যমে মেধার বিকাশ ঘটে?
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তনের সময় অনেক আগেই এসেছে। এখন তার কিছুটা হলেও পরিবর্তন দরকার, নতুবা আমরা আগাতে পারব না।