– উত্তম মণ্ডল
বাগেরহাট পৌরসভার বেশির ভাগ পাকা সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। এসব সড়ক হয়ে পড়েছে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। ফলে পৌরবাসীকে পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে।
জানা গেছে, ১৯৫৮ সালে গঠিত বাগেরহাট পৌরসভা ১৯৯১ সালে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। ১৩ দশমিক ৭৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভায় বর্তমানে লোকসংখ্যা প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার।
পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী টি এম রেজাউল হক রিজভী বলেন, পৌরসভায় ছোট ও বড় ১৬০টি সড়ক রয়েছে। সব মিলিয়ে দৈর্ঘ্য প্রায় ৭০ কিলোমিটার। এর মধ্যে পাকা সড়ক রয়েছে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার। এগুলোর ৮০ শতাংশই বেহাল হয়ে পড়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে বেশ কয়েকটি সড়ক সংস্কার করা হয়। এরপর আর সংস্কারকাজ হয়নি।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের বিভিন্ন সড়কে পিচ ও খোয়া উঠে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। শহরের যদুনাথ স্কুল অ্যান্ড কলেজ-সংলগ্ন সড়ক, সম্মিলনী স্কুল মোড়, পিসি কলেজের সামনের সড়ক, সরকারি মহিলা কলেজ সড়ক, মুনিগঞ্জ আধুনিক হাসপাতাল সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া ভিআইপি সড়ক, রেলরোড বাইপাস সড়ক, হাঁড়িখালী দক্ষিণ পাড়া মসজিদ সড়ক, হাঁড়িখালী প্রধান সড়ক, তেঁতুলতলা সড়ক, কবিখোলা সড়ক, পালপাড়া সড়ক, দক্ষিণ হাঁড়িখালি স্কুল সড়ক, উত্তর হাঁড়িখালি স্কুল সড়ক, পুরাতন বাজার প্রধান সড়ক, পৌরসভা ভবনের সামনের সড়ক, বাসাবাটি প্রধান সড়ক, সরুই কবরস্থান সড়ক, উত্তর সরুই মাদ্রাসা সড়ক, সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় সড়ক, হরিণখানা প্রধান সড়ক, মোস্তাজাবুল হক সড়ক, পদ্মপুকুর উত্তর পাড়ের সড়ক, রেল সড়ক, নূর মসজিদ সড়ক, আমলাপাড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয় সড়ক, কর্মকার পট্টি, কাজী নজরুল ইসলাম সড়ক এবং লিচুতলা সড়কের অবস্থাও খুবই খারাপ।
বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শেখ মো. এনামুল কবীর বলেন, শহরের অধিকাংশ রাস্তাঘাটের অবস্থা করুণ। এতে একদিকে যেমন চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে, অন্যদিকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেক বেশি সময় লাগছে। তা ছাড়া শহরে পরিকল্পিত নালা ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পিসি কলেজের ভেতরের রাস্তাসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমে।
শহরের সরুই এলাকার রিকশাচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাঘাট ভাঙাচোরা। যাত্রীরা ছিটকে পড়ি যায়। আর আমাগো গালি দেয়। তা আমাগো কী দোষ কন দেখি!’
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কান্তি গুহ বলেন, এসব সড়ক মেরামত করতে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা প্রয়োজন। অর্থাভাবে এসব সড়ক মেরামত করা যাচ্ছে না।
পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পৌরসভায় উন্নয়ন বরাদ্দ মেলে খুবই কম। তারপরও আমরা শিগগিরই রাস্তাগুলো ঠিক করতে পারব বলে আশা করছি।’
পৌরসভার সচিব মোহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে উপকূলীয় শহর পরিবেশগত অবকাঠামো প্রকল্পের (সিটিইআইপি) আওতায় পৌরসভার জন্য তিন-চার দফায় ১৩০ থেকে ১৪০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। ওই টাকা থেকে সড়ক উন্নয়নের কাজও হবে। সূত্র: প্রথম আলো
প্রথম আলো প্রতিবেদন/এসআই/বিআই/২০ নভেম্বর, ২০১৬