• মেহেদী হাসান সোহেল
দেশে এখন অরাজকতা চলছে। এই অরাজকতা শুধু শাসকদল দায়ী না, এর অন্যতম কারন শক্তিশালী বিরোধীদলের অভাব। প্রধান বিরোধীদল স্বাধীনতা বিরোধী জামাতের কাধে ভর করে ক্ষমতা যাওয়ার দিবাস্বপ্ন দেখেছিল এবং ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দুর্নীতিতে নিমজ্জিত থাকার কারনে শক্তিশালী বিরোধী অবস্থানে যেতে পারছেনা। তবে বর্তমান শাসকদলেরও একি অবস্থা হবে যখন তারা বিরোধী অবস্থানে যাবে। কারন তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতানা বাস্তবায়নের বদলে চেতনাকে বিক্রি করে সমাজে ছড়ি ঘুরাচ্ছে।
বিএনপি কোন রাজনৈতিক দল নয় তারা হল একটা রাজনৈতিক মোর্চা। এখানে কিছু লোকজন এসেছিল নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি হাসিল করার জন্য। যারা এসেছিল তারা মূলত সুবিধাবাদী ও মৌলবাদী পাকিস্তানপন্থী লোক। জিয়া মারা যাবার পর তাদের এই চেহারাটা স্পষ্ট হয়। সুতরাং এরা আন্দোলন বলতে যেমন কিছু বোঝে না, তেমনি সেরকম কোন দক্ষতাও এদের নেই। আর একারণেই আওয়ামীলীগ এত স্বেচ্ছাচারিতা করবার সুযোগ পেয়েছে এবং স্বেচ্ছাচারিতা করেই যাচ্ছে। BNP রাস্তায় যতটুকু পারফর্ম করার দাবী করে তা করত মূলত জামাত-শিবির। সরকার জামাতকে পাকড়াও করে বিএনপির আসল চেহারাটা আরো স্পষ্ট করে দিয়েছে। সুতরাং ওদের ঘরে বসে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই তো। আর দেশটাও রাহুগ্রাস থেকে মুক্তির কোন পথ পাচ্ছে না। আর এই অবস্থা থেকে মুক্তির উপায় হল সরকার ও বিরোধীদলে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির অবস্থান।
এখন বিএনপিকে জামায়াত ছেড়ে নির্বাচনমূখী রাজনীতিতে আসতে হবে। যেভাবে আওয়ামীলীগ ৭০ এ ইয়াহিয়ার অধীনে নির্বাচন করে দেশের স্বাধীনতার ভিত্তি স্থাপন করেছিল। এই নির্বাচনে অংশগ্রহনের সময় মাওলানা ভাসানী সমালোচনা করেছিলেন। আবার ১৯৭৯ তে সামরিক জান্তা জিয়ার অধীনে নির্বাচন করে। এবার ইয়াহিয়ার মতো ভূল জিয়া করেন নাই। নির্বাচনের আগের দু-বছর আওয়ামী সাপোর্টারদের এমন সাইজ করেছিলো কাউকে মাঠে পাওয়া যায় নাই। তারপর ও এদেশের মানুষকে জরুরী শাসন থেকে মুক্ত করেছিলো। আবার ৮৬ সালে সামরিক জান্তা এরশাদের অধীনে নির্বাচন করছিলো। তবে ওই সংসদ থেকে আওয়ামীলীগ পদত্যাগ করার করার পর ওই সরকারের ভিত দুর্বল হয়ে যায় এবং সামরিক অধ্যায়ের পতন শুরু হয়। তাই নির্বাচনে অংশগ্রহন করে জনমত আরো শক্তিশালী করতে হবে। বারবার জামায়াতের উপর ভর আন্দোলনের নামে ত্রাস করে সাংগঠনিক অবস্থা এতটাই দুর্বল হয়ে গেছে যে নির্বাচনে কারচুপি হলে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার ক্ষমতা নাই। তাই নির্বাচনে অংশ না নেওয়া ই শ্রেয় ভেবে জনগণ থেকে দূরে থাকলে তারা একসময় মুসলিমলীগের মত দলে পরিনত হবে। তবে এও সত্যি যে এই সরকারের পতন এমনি এমনি হবে যদি আর বেশী স্বৈরচারী হয়। খামাখা আন্দোলন করে সুখ নিদ্রা নষ্ট করার ইচ্ছা নাই ভেবে যদি জনগন থেকে দূরে থাকে তাহলে এই সরকারের পতন সুদূর ভবিষ্যতে সম্ভব না।
এক চিমটি সাহস, একমুঠো মনোবল আর স্বাধীনতা বিরধীদের সাথে নিয়ে অন্যায়ের বিপক্ষে লড়াই করা যায় না। লড়তে হবে আপনার মৃত্যঞ্জয়ী সাহস নিয়ে। মৃত্যু আপনার ভবিতব্য জেনে এ লড়াই করতে হবে। তাই সময় থাকতে শুধরাতে হবে কারন সময় গেলে সাধন হবে না।(চলবে)