খুলনা-মংলা ব্রডগেজ রেল লাইন ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় অবিশ্বাস্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে এর ব্যায় দাঁড়াচ্ছে ৩ হাজার ৫১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকায়।
এই রেলপথ নির্মাণের প্রধান উদ্দেশ্য মংলা সমুদ্র বন্দরকে দেশের বিদ্যমান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করা এবং রেলপথে আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপন করা।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সম্ভাব্যতা যাচাই সহ খুলনা হতে মংলা পোর্ট রেলপথ নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় এই ব্যয় বাড়ছে। সংশোধিত প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রস্তুত করেছে রেলওয়ে। সংশোধিত ডিপিপি’তে মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৫১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২১ ডিসেম্বর ২০১০ সালে মূল প্রকল্পটিতে ভারতীয় ডলার ক্রেডিট লাইনের অর্থায়নে মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ১ হাজার ৭২১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ডিসেম্বর ২০১০ থেকে ডিসেম্বর ২০১৩ সাল পযর্ন্ত।
এর মধ্যে সরকারি খাত থেকে আসবে ১ হাজার ১১৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য থেকে আসবে ২ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। প্রকল্পে অতিরিক্ত অর্থ সংস্থানের লক্ষ্যে ভারতীয় ডলার ক্রেডিট লাইনের অর্থায়ন হিসেবে আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার আসবে।
প্রকল্পে ডিপিপি‘তে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রথমে রেলপথ নির্মাণের মোট দৈর্ঘ্য ছিল ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার। কিন্তু বর্তমানে এর মোট দৈর্ঘ্য বেড়ে দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৮৫ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার।
রেলপথটি খুলনা শহরের পূর্ব পাশ দিয়ে নির্মাণ করার কথা থাকলেও বর্তমানে পশ্চিম পাশ দিয়ে নির্মাণ করা হবে। যে কারণে সময় ও ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ বাড়ছে বলে জানায় রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র। নতুন ডিপিপিতে বাস্তবায়ন মেয়াদ উল্লেখ করা হয়েছে জুন ২০১৮ সাল।
প্রকল্প পরিচালক মজিবর রহমান বলেন, প্রথমে রেলপথ নির্মাণের মোট দৈর্ঘ্য ছিল ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার। কিন্তু বর্তমানে এর মোট দৈর্ঘ্য বেড়ে দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৮৫ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার। এছাড়া প্রকল্পটি খুলনা শহরের পূর্ব পাশ দিয়ে নির্মাণ করার কথা থাকলেও বর্তমানে পশ্চিম পাশ দিয়ে নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পের অতিরিক্ত অর্থ সংস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত আরো ১০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এই প্রকল্পে। বাকি অর্থ সরকারি খাত থেকে মেটানো হবে।
নানা কারণে প্রকল্পটির ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ছে বলে জানায় রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র। বাস্তবায়ন পর্যায়ে প্রকল্পের রুট ও দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি, লুপ,লাইনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি, স্টেশন বিল্ডিংয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি, নতুন অন্তর্ভুক্ত স্টেশনসহ সকল স্টেশন বি- শ্রেণীতে উন্নীতকরণ এবং মালামালের মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে।
প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বৃদ্ধির কারণ উল্লেখ করে রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নতুন জনবল নিয়োগে ব্যয় বৃদ্ধি, তিনটি মাইনর ব্রিজের পরিবর্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ (রুপসা) নির্মাণ, খাতের ব্যয় বৃদ্ধি, সিডি ভ্যাট, আইটি খাতের ব্যয় বৃদ্ধি এবং জমি অধিগ্রহণের কারণে ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ৭০৭ দশমিক ৭৪ একর জমি অধিগ্রহণ ও ৭৩ দশমিক ৩৫ একর জমি লিজ গ্রহণের বিষয়েও সংশ্লিষ্ট প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় ৭১৬ দশমিক ৮০ মিটার দৈর্ঘে্যর রূপসা সেতু নির্মাণ করা হবে। সেতুর উভয় পার্শ্বে মোট ৪ হাজার ৪১৩ দশমিক ২০ মিটার ব্রিজ এপ্রোচ তৈরি করা হবে। বর্তমানে পরামর্শক প্রতিবেদন অনুযায়ী পশ্চিম এলাইনমেন্ট চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হওয়ায় প্রস্তাবিত সংশোধিত ডিপিপি’তে রূপসা নদীর উপর বিদ্যমান সড়ক সেতুতে একটি রেল সেতুও নির্মাণ করা হবে।