সুন্দরবনে র্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ২ ব্যক্তির পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি। এদিকে এঘটনায় থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেছে র্যাব-৮।
শুক্রবার সন্ধায় র্যাব-৮ এর উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) মো. আশরাফ বাদী হয়ে বাগেরহাটের মংলা থানায় মামলা দুটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামী করা হয়েছে।
এর আগে দুপুরে নিহত ২ দস্যুর লাশ ও উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ মংলা থানায় হস্তান্তর করে র্যাব-৮।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে র্যাবের দাবিকৃত নিহত ওই দুই দস্যুর ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ১০টা পর্যন্ত সদর হাসপাতাল মর্গে নিহতদের লাশ নিতে কোন স্বজনের দেখা পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, পুলিশ তাদের স্বজনদের জন্য আর অপেক্ষা না করে তড়িঘড়ি করে সন্ধায় লাশ দাফনের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ মর্গে ওই দুই ব্যক্তির স্বজনদের খুঁজে না পেয়ে তাদের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মইন উদ্দিন মোল্লা শুক্রবার রাতে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, হাসপাতালের চিকিৎসক মোশাররফ হোসেনের নের্তৃত্বে ৩ সদস্যের একটি দল নিহতদের লাশে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করেছেন। তাদের শরীরে একাধিক গুলি পাওয়া গেছে।
এদিকে, নিহতদের বেওয়ারিশ হিসেবে দেখিয়ে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম নামে একটি সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করতে বাগেরহাট পৌরসভার মেয়রর কাছে আবেদন করেছে পুলিশ।
মংলা থানার উপ-পদির্শক (এসআই) মঞ্জুর এলাহী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, সুন্দরবন থেকে নিহত ওই দুই ব্যক্তির লাশ মংলা থানায় আনার পর এই এলাকার উৎসুক জনতা থানায় ভিড় করে। তবে কেউই এদের সনাক্ত করতে পারেনি।
নিহতদের বিষয়ে পুলিশের কাছে তেমন কোন তথ্য নেই। নিহতদের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। স্বজনদের খুঁজে না পাওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে তাদের লাশ দাফনের জন্য আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করতে বাগেরহাট পৌরসভার মেয়েেরর কাছে আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পেলে শনিবার তাদের দাফন সম্পন্ন করা হবে।
র্যাব-৮ এর দাবি, শুক্রবার সকালে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের মরা পশুর ফরেস্ট ক্যাম্পের পূর্ব পাশে সীমানার খাল এলাকায় অভিযানকালে দস্যু দারগা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এসময় দুই নিহত হন।
র্যাব এই দুই ব্যক্তিকে বনদস্যু হিসেবে দাবি করলেও তাদের পূর্ণাঙ্গ নাম পরিচয় জানাতে পারেনি। নিহতদের মধ্যে একজনের নাম সগীর হাওলাদার (৩০) জানালেও অপরজনের (২৮) নাম জানাতে পারেনি।
এসময় ঘটনাস্থল থেকে ১২টি দেশি-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, ১৭৭ রাউন্ড গুলি ও দস্যুদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধারের দাবি করে র্যাব-৮।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র্যাব) নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসাবে ডিএমপি’র সাবেক কমিশনার বেনজির আহমেদ দায়িত্ব নেবার পর এটাই র্যাবের হাতে প্রথম কোন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হবার ঘটনা।