বাগেরহাট জেলা কারাগারে আটক ১৩১ জন ভারতীয় বন্দিকে শীতবস্ত্র দিয়েছে দেশটির হাই কমিশন।
রবিবার সকালে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলীর হাতে দেশেটির বন্দি নাগরিকদের জন্য ১৩১টি শালের চাদর তুলে দেন ভারতের হাই কমিশনারের এপিএস মিরাজ কুমার।
পরে হাই কমিশনারের এপিএস মিরাজ কুমারের নেতৃত্বে সে দেশের একটি প্রতিনিধি দল বাগেরহাট কারাগারে গিয়ে ভারতীয় ওই বন্ধিদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজ খবর নেন।
বন্দি এসব ভারতীয় নাগরিকের মধ্যে বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবন উপকূলে অবৈধ্য অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের অপরাধে ১৩০ জেলে ও একজন পাসপোর্ট-ভিশা ছাড়া এদেশে আসার অপরাধে আটক হয়ে কারাগারে রয়েছেন। বাগেরহাট কারাগার সূত্র এখবর নিশ্চিত করেছে।
বাগেরহাট কারাগারের জেলার বদরুদ্দোজা চৌধুরী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জনান, এসব ভারতীয় নাগরিক ৯ বারে আটক হয়ে বাগেরহাট কারাগারে এসেছে। বাগেরহাট কারাগারে আটক ১৩১জন ভারতীয় বন্ধির মধ্যে প্রথম আসে এক জন। সে পাসপোর্ট-ভিশা ছাড়া এদেশে আসার অপরাধে বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশের হাতে আটক হয়ে এবছরের ১৬ অক্টোবর কারাগারে আসে।
এরপর বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ জলসীমার সুন্দরবন উপকূলের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় অবৈধ্য অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের অপরাধে নৌবাহিনীর বিএনএস মংলা নৌঘাটির সদস্যদের হাতে ৮ দফায় ১০টি ট্রলারসহ আটক ১৩০জন ভারতীয় জেলে। এবছরের ১৭ অক্টোবর প্রথম দফায় আটক হয়ে বাগেরহাট কারাগারে ১৪জন ভারতীয় জেলে। এরপর ২০ অক্টোবর ১৪জন, ২২ অক্টোবর ১৪জন, ২৪ অক্টোবর ১৩জন, ২৮ অক্টোবর ৯জন, ১ নভেম্বর ২৮জন, ১৯ নভেম্বর ১২জন ও ২৩ নভেম্বর ২৬জন ভারতীয় জেলে আটক হয়ে বাগেরহাট কারাগারে আসে।
আটক এসব জেলেদের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণচব্বিশ পরগোনা জেলায়।
বাগেরহাট কারাগার সূত্রে জানাগেছে, বর্তমানে বাগেরহাট কারাগারে ৬ শতাধিক বন্ধি থাকলেও ভারতীয় বন্ধিদের আলাদা ৩টি রুমে রাখা হয়েছে।
ভাষাগত ও খাদ্যাভাসের মিল থাকায় ভারতীয় এসব বন্ধিরা ভালো আছে বলে কারাগার সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
এর আগে শীতবস্ত্র না থাকায় বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি তাদের কম্বল দিয়েছে। আটক এসব বন্ধিদের নামে মাত্র একটি করে মামলা রয়েছে। তাও আবার অবৈধ্য অনুপ্রবেশের মামলা।
গত বছরের শীত মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ জলসীমার সুন্দরবন উপকূলের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় অবৈধ্য অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের অপরাধে নৌবাহিনীর সদস্যদের হাতে ৩ দফায় ৭৪জন ভারতীয় জেলে আটক হয়ে বাগেরহাট কারাগারে আসে। সেসময় ওই ৭৪জন ভারতীয় জেলেদের নামে ২টি করে মামলা হয়।
অবৈধ্য অনুপ্রবেশ ও মাছ চুরির ২টি করে মামলার আসামী হলেও ভারতীয় হাই কমিশনের তৎপরতায় এক মাসের মধ্যে তারা ট্রলারসহ মুক্ত হয়ে দেশে ফিরতে সক্ষম হয়েছিল।