বাগেরহাটের মংলায় স্থানীয় এক আ.লীগ নেতা এবং ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গ্রামবাসী।
দুশ্চরিত্র ও লম্পট মেম্বর রেজি সরকারের অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে রোববার মংলা প্রেসক্লাবে তাঁর হাত থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের মালগাজী গ্রামের অধিবাসীরা।
এসময় নির্যাতিত গ্রামবাসীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মালগাজী গ্রামে মোঃ জাহাঙ্গীরের স্ত্রী আসমা বেগম।
তিনি বলেন, তাদের গ্রামের শেখ ওয়াহিদ মুরাদ ব্যবসায়িক কাজে বাইরে থাকায় স্ত্রী কোহিনুর বেগমের (৩৫) তার মেয়েকে নিয়ে সংসার ও পরিবার দেখাশুনা করে আসছিলেন। কিন্তু তার (কহিনুর) দিকে লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ইউপি মেম্বর রেজি সরকারের।
এর পর থেকে রেজি সরকার তাকে বিভিন্ন ভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়ে গত ১০ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তাদের (মুরাদের) বাড়িতে ঢুকে কোহিনুরের হাত ধরে টানা-হেঁচড়া করে। এক পর্যায় মুরাদের স্ত্রী তার সম্ভ্রম রক্ষা করতে রেজি সরকারকে তালা দিয়ে স্বজোরে আঘাত করে।
এ ঘটনার পর কোহিনুর বেগম বাদী হয়ে ১১ নভেম্বর মংলা থানায় ওই ইউপি মেম্বর রেজি সকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং-৬)।
মামলার পর রেজি সরকার আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন অভিযোগ করে কোহিনূর জানান- রেজি সরকার নেতারূপে ভন্ড। তার লালসার স্বীকার হয়ে এলাকার অনেক গৃহবধু, স্কুল কলেজের ছাত্রী, এমনকি কিশোরীরা ঘর ছাড়া। তিনি ওই প্রভাবশালী লম্পটের হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে প্রশাসনের উর্ধতন মহলের আশু হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।
এর আগে ওই আওয়ামী লীগ নেতা একই গ্রামের এক নারীকে অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে মিথ্যে অভিযোগে তার মাথার চুল কেটে দেয় বলে লিখিত বক্তবে অভিযোগ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা পর্যন্ত গড়ায়।
লিখিত বক্তবে আসমা বেগম আরো বলেন, ওই মেম্বর একই গ্রামের ফিলিপ সরকারের স্ত্রী বেলা সরকারকে বছর তিনেক আগে কু-প্রস্তাব দিয়ে লাঠিপেটা করে। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকার এক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের দায়ে মংলা থানায় অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া আরো একটি মেয়ের সাথে ওই মেম্বর দীর্ঘ দিন অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে তাকে এলাকা ছাড়া করে।
লিখিত বক্তব্য বলা হয়- তাঁর বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো তাকে মিথ্যে মামলায় ফাসিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় ঘের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর তাঁর (রেজি) অপরাধ কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় তার বিরুদ্ধে গত ১২ নভেম্বর মংলা থানায় একটি মিথ্যে মামলা দায়ের করেছে। এখানেই ক্ষ্যান্ত নয় ওই মেম্বর। সে এলাকায় নিয়মিত মদ জুয়ার আসর বসিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
এসব কারনে ওই ইউপি সদস্যকে অপসারনসহ ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার জোর দাবি জানিয়েছে মালগাজী গ্রামবাসী
তবে, এসব অভিযোগের ব্যাপারে রেজি সরকারের ব্যবহৃত মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে কোহিনূরের দায়ের করা মামলার সত্যতা স্বীকার করে মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলায়েত হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন- রেজি সরকার পালাতক রয়েছেন। তাকে পুলিশ খুঁজছে।