বাগেরহাট ভ্রমনে আসা দেশী-বিদেশী দর্শনার্থীদের জন্য এই প্রথম স্থানীয়ভাবে প্রদর্শক বা গাইড তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।
এর অংশ হিসেবে ১০ জন তরুণীসহ বাগেরহাটের মোট ৩০ জন নিয়ে পর্যটন কর্পোরেশনের পাঁচ দিনের এক ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচি রোববার শেষ হয়েছে।
প্রাচীণ মসজিদের শহর, সাংস্কৃতিক ‘বিশ্ব ঐতিহ্য’ বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদসহ বিভিন্ন পূরাকীর্তি পরিদর্শনে আসা দেশী-বিদেশী দর্শনার্থীদের জন্য স্থানীয়ভাবে প্রদর্শক বা গাইড তৈরীর উদ্যোগ এটাই প্রথম।
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের এই আয়োজন ও স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদসহ পূরাকীর্তি সমৃদ্ধ এলাকাগুলোর স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে এরাই হতে যাচ্ছেন প্রথম পর্যটক প্রদর্শক বা ট্যুরিস্ট গাইড।
ফলে বর্তমান বাগেরহাটে চৌদ্দ শতকে স্থাপিত হযরত খান জাহান (র:) এর প্রাচীণ নগররাষ্ট্র খলিফতাবাদের টিকে থাকা স্থাপত্য নিদর্শনসহ সমসাময়িক ও পরবর্তি সময়ের বেশ কিছু ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখতে আসা দেশী বিদেশী পর্যটকরা তাদের ভ্রমণকালে এখন থেকে স্থানীয় পরিদর্শক বা গাইড সংগ্রহ করতে পারবেন। এতে একদিকে যেমন পর্যটকরা স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও দর্শনীয় স্থানগুলোর খুটিনাটি বিষয় সম্পর্কে প্রদর্শকদের কাছ থেকে জানতে পারবেন তেমনি এসব পরিদর্শকদের জন্যও আত্ম কর্মসংস্থানের একটি সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের পরিচালক (পরিকল্পনা) কালী রঞ্জন বর্মণ বলেন, দক্ষিণ এশীয় ট্যুরিজম ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় কমিউনিটি ট্যুরিজমকে উৎসাহিত করতে বাগেরহাটে প্রথম বারের মত এই ট্যুর গাইড তৈরীর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ফলে বিশ্বের অন্যতম সাংস্কৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ ও অন্যান্য পূরাকীর্তি স্থাপনাগুলোতে বিদেশী পর্যটকদের ভ্রমণ কার্যক্রম আরও সুলভ ও আনন্দদায়ক হবে।
স্থানীয় জনগোষ্ঠী ভ্রমণ প্রদর্শক হিসেবে ট্যুরিজম কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত থাকলে এখানে ট্যুরিজম দ্রুত বিকশিত হবে। পর্যায়ক্রমে আমরা আরও ভ্রমণ প্রদর্শক তৈরী এবং তাদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করবো।
এই প্রকল্পের কমিউনিটি ট্যুরিজম বিষয়ক পরামর্শক ফারুক হাসান বলেন, এটা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। আমরা এই তরুণ-তরুণীদের পর্যবেক্ষণে রাখবো। তাদের পরিচয়পত্র দেয়া হবে। তা ছাড়া দায়িত্ব পালনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের সাথে যুক্ত ট্যুর এজেন্সীগুলোর কাছে তাদের নাম তালিকা ও অন্যান্য তথ্য সরবরাহ করা হবে।
এই ত্রিশ ভ্রমণ প্রদর্শকের অন্যতম মো: সাইফুল হক ও খাদিজা খাতুন প্রশিক্ষণ শেষে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘সম্পূর্ণ বিষয়টিই আমাদের কাছে নতুন, ভালো লেগেছে। অনেক কিছু জেনেছি। সুন্দর পেশা। আমরা কাজ করার চেষ্টা করবো।’