বাগেরহাটের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন।
মঙ্গলবার সকালে ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ, হযরত খানজাহানের মাজার এবং অযোধ্যার মঠ পরিদর্শনে বাগেরহাট আসেন তিনি।
সকালে বৃষ্টির মাঝে খুলনা থেকে সড়ক পথে বাগেরহাটে পৌছে প্রথমে ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদে ঢুকে বাগেরহাট যাদুঘর পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় যাদুঘরে রাখা খানজাহানের শাসনামলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ঘুরেঘুরে দেখেন।
পরে, বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় দিয়ে পঞ্চদশ শতকে খান-উল-আযম উলুঘ খান-ই-জাহানের নির্মিত অপূর্ব কারুকাজ খোচিত ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ পরিদর্শন করেন। পরে বাগেরহাট যাদুঘরে রাখা পরিদর্শন বইতে তার অনুভূতির কথা লিখেন।
এসময় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে রবার্ট গিবসনের হাতে ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ এবং অযোধ্যার মঠের দু’টি প্রতিকৃতি তুলে দেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক মো. আমিরুজ্জামান।
পরিদর্শন কালে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশে হাই কমিশনার নিযুক্ত হবার আগে এদেশে আমি ৪ বছর ডেপুটি হাইকমিশনার ছিলাম। বাগেরহাটের পুরার্কীতি দেখার সখ আমার অনেক আগে থেকেই ছিল। কিন্তু তা আমি পূরণ করতে পারছিলাম না। এবার এসে আমি তা পূরণ করলাম।
তিনি বলেন, এদেশের অনেক জেলা আমি ঘুরেছি কিন্তু বাগেরহাটে আমার আগে কখনো আসা হয়ে ওঠেনি। এটাই আমার প্রথম বাগেরহাট সফর।
এসময় উচ্ছ্বসিত কন্ঠে তিনি বলেন, রিলিজিয়াস হারমনি, অর্থাৎ ধর্মীয় সোহার্দ্য ও সম্প্রীতির শহর। পুরাকীর্তিগুলোর সংরক্ষণকে দুই ধর্মের সাংস্কৃতিক বন্ধনকে অটুট করে রেখেছে।
ধর্মীয় সোহার্দ্য ও সম্প্রীতির শহর বাগেরহাটে দুই ধর্মের প্রতিই দারুণ সম্মান দেখানো হয়েছে। এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন গুলো যত্নসহকারে সংরক্ষিত। যা আমাকে দারুণ অভিভূত করেছে।
ষাটগম্বুজ মসজিদ ও অযোধ্যার মঠের কথা উল্লেখ কলে তিনি বলেন, দুই ধর্মের মানুষ এই দুটি নিদর্শন নির্মাণ করে এ এলাকার মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বাড়িয়ে দিয়েছে। যুগযুগ ধরে এখানকার মানুষ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর বাগেরহাটের পুরার্কীর্তিগুলো রক্ষনাবেক্ষণ করছে এটা সত্যিক অবাক করা বিষয়।
এসময় তার সাথে ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনের পলিটিক্যাল অ্যাডভাইজার ইজাজুর রহমান, তথ্য ও গণযোগাযোগ কর্মকর্তা নারায়ণ দেবনাথ, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক ও আইসিটি) মো. আরিফ নাজমুল হাসান, পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্যা, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাগেরহাটের তত্ত্বাবধায়ক গোলাম ফেরদৌস প্রমুখ।
বাগেরহাট-খুলনা সড়কের পাশে বাগেরহাট সদর উপজেলার ষাটগম্বুজ ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ, হযরত খানজাহান (রহ.) মাজার এবং একই উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের কোদলা গ্রামে অবস্থিত অযোধ্যার মঠ পরিদর্শন শেষে বেলা ১১টার দিকে খুলনার উদ্দেশ্যে বাগেরহাট ত্যাগ করেন তিনি।