হত্যার দায়ে নিষিদ্ধ চরমপন্থী সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির ৬ সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের জেল দিয়েছেন বাগেরহাটের একটি আদালত।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক এস.এম. সাইফুল ইসলাম মঙ্গলবার বিকেলে এই আদেশ দেন।
রায় ঘোষনার সময় আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে পাঁচ জন। পরে তাদের কঠোর পুলিশ পাহারায় বাগেরহাট কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার গোয়াল বাথান গ্রামের দুই সহোদর আব্দুল শেখ ও আব্বাস শেখ, একই গ্রামের আজমল হোসেন, রূপসা উপজেলার সামন্তসেনা গ্রামের আব্দুর রহমান, পাঁচালী গ্রামের আরিফ শেখ এবং বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার মানসা-বাহিরদিয়া ইউনিয়নের মানসা চারাবটতলা গ্রামের মাসুদ রানা। এদের মধ্যে আব্দুর রহমান পলাতক রয়েছেন।
এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত আব্দুল মতিন গাজী নামে এক জনকে বেকসুর খালাস দেন।
আদালত সূত্র ও মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে দণ্ডপ্রাপ্তরা রূপসা উপজেলার গিলাতলা গ্রামের ঠিকাদার ও মাছ ব্যবসায়ী শেখ শফিউজ্জামানকে পার্শ্ববর্তি বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার মানসা-বাহিরদিয়া ইউনিয়নের মানসা চারাবটতলা গ্রামে হাত-পা বেঁধে জবাই করে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়।
এই ঘটনায় ঐ রাতে নিহতের স্ত্রী নাসিমা বেগম ফকিরহাট থানায় অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ফকিরহাট থানার উপ-পরিদর্শক গৌতম চন্দ্র মালি তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত মামলার শুনানীকালে ১৪ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষনা করেন।
আদালতে সংরক্ষিত তথ্য অনুযায়ী যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মাসুদ রাণা পুলিশের হাতে আটক হয়ে ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর এই মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি তার জবানবন্দিতে স্বীকার করেন যে পূর্ব বিরোধের জের ধরে চরমপন্থী পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির দণ্ডপ্রাপ্ত এই সদস্যরা মুঠোফোনে শফিউজ্জামানকে ঘটনাস্থলে ডেকে এনে জবাই করে হত্যা করেছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বাগেরহাট আদালতের সরকারী কৌশলী (পাবলিক প্রসিকিউটর) অ্যাড. মোহম্মদ আলী এবং আসামী পক্ষে ছিলেন অ্যাড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।